বাফুফে নির্বাচন : নির্বাচন থেকে সরে যেতে চান নাসের জাহেদী
যশোরের শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। নীরবে দেশের তৃণমূল ফুটবলের সেবা করছেন। হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া যাকে কেউ চিনতও না, জানত না। সেই মানুষটি দেশের ফুটবলের মূল স্রোতে কাজ করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। বাফুফের সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আর সেই পদে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন।
নির্বাচন না করতে চাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সাম্প্রতিক ফুটবল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা নাসের শাহরিয়ারের কাছে ভালো লাগেনি। ফুটবল নির্বাচনটা তার কাছে প্রাণবন্ত মনে হচ্ছে না। নির্বাচনের আগেই অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা নাসের শাহরিয়ারকে নির্বাচনে অনাগ্রহী করে তুলছে। নির্বাচিত হয়ে বোর্ডে বসে তিক্ততা তৈরি হওয়ার আগে এখনই সরে আসা ভালো মনে করছেন তিনি।
নির্বাচন নিয়ে নাসের শাহরিয়ার বললেন, 'অস্বস্তি লাগছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু ঘটনা ঘটছে। সেগুলো স্পোর্টস ম্যান স্পিরিটের ভেতরে আসে না। নির্বাচন হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ফ্যামিলি স্পোর্টস হবে এটি। একজন জিতবেন, তিন জন হয়ত জিতবেন না। আবার এক সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করবেন। যিনি জিতবেন তিনি কমিটিতে কাজ করবেন। যিনি জিতবেন না তাকে বিভিন্ন কমিটিতে রাখবেন কাজ করবেন। কিন্তু দেখছি হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশটা এখন নেই এবং এটা ক্ষেত্র বিশেষে মামলা মোকদ্দমায় গড়াচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এগুলোর সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না।'
শুধু এবার বাফুফের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাসের শাহরিয়ার দেশের ফুটবলের অনেককে সরাসরি দেখেছেন। নির্বাচন করতে এসে সবার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তাকেও সবাই দেখছেন। অস্বস্তিতে ভুগছেন। ফুটবল খেলতে গেলে কাদা লাগবে, জাসি, বুট ময়লা হবে। হলুদকার্ড, লালকার্ড হবে, এটা ফুটবলেরই অংশ। নির্বাচন করতে গেলেও এমনটা হয়। 'হয় যদি আমি আগে এসবের সঙ্গে পরিচিত থাকতাম। আমি তো কোনো অ্যাসোসিয়েশন বা জেলায় জড়িত ছিলাম না। যাই হোক নির্বাচন করতে এসে অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। যাদের ছবি খবরের কাগজে দেখেছি। সংবাদ পড়েছি। সামনা সামনি কথা হয়নি তাদের অনেকের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি, ক্লাবের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। হয়তো এতে আমার একাডেমি লাভবান হবে। আমি এই সম্পর্কটা আরও গভীর করতে চাই বললেন নাসের শাহরিয়ার।
ফুটবল পর্দার আড়ালের এই মানুষটি রাগ করে, জেদ করে সরে যেতে চাইছেন সেটা মনে হয়নি। তার ভেতরে অভিমান। নানা ঘটনা নিয়ে অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দেখেছেন কোনোটাই সুরাহা হচ্ছে না। নীতি বিরোধী কোনো কিছু করতেও রাজি না নাসের শাহরিয়ার, কাউকে দোষারোপ না করে নিজেই নীরবে সরে যাওয়া ভালো মনে করছেন বর্ষীয়ান এ সংগঠক। জেদ বা অভিমান শব্দটি উচ্চারণ না করে নাসের শাহরিয়ার বললেন, 'জেদ বা অভিমান নয়। একেকটা মানুষের একেক ধরন থাকে। এই ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে যে, আমি যে প্রকৃতির মানুষ তার সঙ্গে হয়ত পুরোপুরি মিলছে না। সুতরাং আমার কাছে মনে হয়েছে ফেডারেশনের ভেতরে থাকার থেকে বাইরে হতে আরো বেশি কন্ট্রিবিউট করতে পারব। এই জন্যই আমি নির্বাচনে থাকছি না। আমি ফুটবলের সঙ্গেই ছিলাম। বাফুফেতে না থাকলেও আমি ফুটবলের জন্য কাজ করব।'
একজন উদ্যমী ফুটবল তৃণমূল থেকে উঠে আসা নিভৃতে থাকা সংগঠক। নিজের টাকায় ছয় তলা ফুটবল ভবন নির্মাণ করেছেন। মাঠ তৈরি করেছেন। স্বপ্ন নিয়ে দেশের ফুটবলের জন্য কাজ করতে বাফুফের নির্বাচনে এসেছিলেন। কিন্তু সরে যেতে চাইছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com