আন্তর্জাতিক :

তিস্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী সমাধান চেয়ে ভারতের সংসদে সোচ্চার হলেন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির সংসদ সদস্য জয়ন্ত কুমার রায়। সংসদে তিনি বলেন, কেন্দ্রের সদিচ্ছা এবং পর্যাপ্ত অর্থের অনুমোদন থাকলেও তিস্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী সমাধান করতে ব্যর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ের দার্জিলিং এবং সমতলের জলপাইগুড়ির বড় অংশ দিয়ে বয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিস্তা। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সারাবছর তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিদার বাংলাদেশ। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের তিস্তায় দেখা মেলে ধুধু মরুভূমি, আর বর্ষা আসতেই তিস্তার পানিতে এক মৌসুমে একাধিকবার বন্যার মুখোমুখি হয় তিস্তাপারের মানুষ। বাংলাদেশের এসব হতভাগ্য মানুষের মতোই অবস্থা হয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক ব্লকের লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের। 

বৃহস্পতিবার ভারতের নয়াদিল্লিতে সংসদ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। তিস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমবঙ্গের মালব্লকের টোটগাও, গাজোলডোবা ব্যারেজ সংলগ্ন রাজগঞ্জ ব্লক, মেখলিগঞ্জ ও ময়নাগুড়ি ব্লকের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, বছরে একাধিকবার তিস্তার কারণে সৃষ্ট বন্যায় এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বারবার বন্যা হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী সমাধান করতে ব্যর্থ। তিস্তার কারণে বাড়িঘর হারিয়ে ইতিমধ্যে বহু মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক বছর তিস্তা নদীতে বন্যার ফলে যেমন পলি পড়ে চা বাগানসহ চাষযোগ্য জমির ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে, মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর জীবনহানিও ঘটছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য দেওয়া কেন্দ্রের অর্থ অপচয় করেছে রাজ্য সরকার। বন্যা নিয়ন্ত্রণের মূল সমাধান না খুঁজে সবসময় অস্থায়ীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এ সময় বন্যা নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রতিনিধি দলকে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা সংলগ্ন এলাকায় পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি।