ঢাকা, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

সরেজমিন : আওয়ামী লীগের ঢাকার তিন কার্যালয় ‘ভূতের বাড়ি’ : কেন্দ্রীয় কার্যালয় যেন গণশৌচাগার আড্ডা জমায় মাদকসেবীরা

Publish : 09:05 AM, 07 December 2024.
সরেজমিন : আওয়ামী লীগের ঢাকার তিন কার্যালয় ‘ভূতের বাড়ি’ : কেন্দ্রীয় কার্যালয় যেন গণশৌচাগার আড্ডা জমায় মাদকসেবীরা

সরেজমিন : আওয়ামী লীগের ঢাকার তিন কার্যালয় ‘ভূতের বাড়ি’ : কেন্দ্রীয় কার্যালয় যেন গণশৌচাগার আড্ডা জমায় মাদকসেবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগের তিন কার্যালয় এখন পরিত্যক্ত পোড়া ভবন। একসময় যে কার্যালয়গুলো থেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো, হাজারো নেতাকর্মীর ভিড়ে জমজমাট থাকত, সেগুলো ধ্বংসস্তূপের মতো দাঁড়িয়ে আছে। সম্প্রতি কার্যালয় তিনটি ঘুরে এমন দৃশ্য দেখেছেন এ প্রতিবেদক।

এই তিন কার্যালয় হচ্ছে– রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী  লীগ কার্যালয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন প্রবল জনরোষের শিকার হয়ে গণভবন, সংসদ ভবন ও ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের এই তিন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছে। সেখানে পথশিশু আর মাদকসেবীদের আড্ডা চলে। ধানমন্ডির দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ভগ্নস্তূপ। পুলিশবেষ্টিত পোড়া ভবনটির সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়ায় নেতাকর্মী দূরে থাক, সাধারণ মানুষের প্রবেশেরও অনুমতি নেই। অন্যদিকে কঙ্কালসার তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যেন ভূতুড়ে পরিবেশ। তালাবদ্ধ এই কার্যালয়ও জনশূন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ আগস্টের আগে এই তিন কার্যালয়ে বেশ কিছু কর্মচারী কাজ করতেন। তবে সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর পাশাপাশি এসব কর্মচারী আত্মগোপনে গেছেন। ফলে সমকালের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয় গত বুধবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতেই দুর্গন্ধ পাওয়া গেছে। আশপাশের লোকজন জানান, কার্যালয়টি এখন গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছে। নিচতলা থেকে শুরু করে ১০ তলা ভবনের প্রায় প্রতিটি তলায় একই অবস্থা। যত্রতত্র মলমূত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় আশপাশের এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এলাকার শ্রমজীবী, রিকশাচালক ও দোকান কর্মচারী, যার যখন প্রয়োজন হয়, তখনই ভবনটিকে মলমূত্র ত্যাগের স্থান হিসেবে ব্যবহার করে। শ্রমজীবী বিশেষ করে রিকশাচালকরা পরিশ্রমের পর ভবনের ছাদকে বিশ্রামের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করেন। আর সেখানে রাতে পথশিশু আর ভাসমান মাদকসেবীদের আড্ডা বসে– এমনটিও জানালেন আশপাশের কয়েকজন।

 ঢাকার গুলিস্তান এলাকার ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ১০ তলাবিশিষ্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অবস্থান। ২০১৮ সালের ২৩ জুন পুরোনো কার্যালয় ভেঙে নির্মিত অত্যাধুনিক ১০ তলা ভবন উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কার্যালয়ের আট কাঠা জমি ৯৯ বছরের জন্য সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া। পরে এই জমিতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করে এটিকে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

৫ আগস্টের সরকার পতনের দিন বিকেলে ভবনটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে চলে  ভাঙচুর ও লুটতরাজ। এই লুট চলেছে আগস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। যে যার মতো করে কার্যালয়টির বিভিন্ন তলার কক্ষে থাকা মূল্যবান আসবাব, স্টিলের আলমারি, কম্পিউটার, ইলেকট্রিক সামগ্রীসহ সব ধরনের মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। হাতুড়ি পিটিয়ে খুলে নেওয়া হয়েছে লোহা, স্টেইনলেস স্টিল, দরজা-জানালা। এর পর থেকে গত চার মাস ধরে ভবনটি পরিত্যক্ত।

এই ভবনের সামনের অংশের দেয়ালের একপাশে স্টিলের বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। পাশে দলীয় প্রতীক নৌকা। নিচে লেখা ছিল ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’। ওপরের অংশ দুটিতে ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দৃশ্য। আর ভবনের নিচে বাঁ পাশে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। প্রবেশমুখের ডান পাশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে অস্থায়ী বেদি নির্মাণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো প্রতিবছর। সরেজমিন পরিদর্শনকালে এসবের কিছু দেখা যায়নি। তবে ভাঙা অবস্থায় দলীয় প্রতীক নৌকা ঝুলতে দেখা গেছে।

১০ তলা এই ভবনের নিচতলায় ছিল আগত নেতাকর্মীর অভ্যর্থনা কক্ষ। আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল দলের প্রকাশনা দপ্তর। দ্বিতীয় তলা  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের জন্য বরাদ্দ থাকলেও অধিকাংশ সময় আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ হিসেবে ব্যবহার হতো। তৃতীয় থেকে ষষ্ঠতলা পর্যন্ত ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এ ছাড়া সপ্তম তলা দলের দপ্তর, অষ্টম তলা দলীয় সাধারণ সম্পাদক এবং নবম তলায় ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়। দশম তলা সব সময় তালাবদ্ধ থাকত। যদিও ভবনটি উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, দশম তলা ডরমিটরি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে প্রতিটি তলার কক্ষগুলোতে আগুনে পোড়া ছাই ও কাগজপত্র, ভাঙা কাচ, পোড়া বইপত্র ও কাঠ, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবের অংশবিশেষ এবং ময়লা পানি দেখা গেছে। মলমূত্রে পরিপূর্ণ বেশির ভাগ জায়গা। সবকিছু মিলিয়ে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা।

কার্যালয়ের আশপাশের কয়েকজন দোকানি জানান, ৫ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত কিছু নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা গেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। তখনও কার্যালয়টিকে পাহারা দিচ্ছিলেন তারা। সকালের দিকে সামনের সড়কে মিছিলও করেছেন তারা। দুপুর ১টায় পরিস্থিতি অনুমান করতে পেরে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চলে যান নেতাকর্মী ও কার্যালয়ের কর্মচারীরা।

আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনের সড়কের চা বিক্রেতা আলাউদ্দিন জানান, গত আট বছর ধরে এখানে চা বিক্রি করেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে আজকের মতো কখনও এমন নেতাকর্মীশূন্য দেখেননি আওয়ামী লীগের কার্যালয়। ৫ আগস্টের পর থেকে এখন আর কেউ এখানে আসেন না।

একইভাবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উল্টো দিকের একটি ভবনে অবস্থিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল ৫ আগস্ট। সেখানে ভগ্নস্তূপ দেখা গেছে।

ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়

ধানমন্ডি ৩/এ সড়কের ৫১ নম্বর বাড়িটি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। তিন তলাবিশিষ্ট এই ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ সংবাদ সম্মেলনের জন্য ব্যবহার করা হতো। আরেকটি কক্ষ ব্যবহার করতেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও অন্য নেতারা। আর ছোট একটি কক্ষ ব্যবহার করতেন দলের দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদক। দ্বিতীয় তলায় ছিল দলের মুখপত্র উত্তরণ পত্রিকার অফিস। এ ছাড়া তৃতীয় তলায় ছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অফিস।

জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে এই ভবনটি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। প্রথমে এটি ভাড়া নেওয়া হয়। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে ভবনটি দলের নামে কেনা হয়। এর পর ২০১৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর পাশের চার তলাবিশিষ্ট আরও দুটি ভবন কিনে দলীয় সভাপতির কার্যালয়টিকে আরও সম্প্রসারণ করা হয়। সে সময় ভবন দুটি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে কেনা হয় বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এই দুই ভবনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকমণ্ডলীর নেতারা এবং কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যরা বসতেন। এখানকার একটি কক্ষে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রকাশনার প্রদর্শনী ও বিক্রির স্টল ছিল। নির্বাচনকালে পাশের ভবনটিকে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

৫ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের এই তিনটি ভবন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার রোষের শিকার হয়। সেদিন আগুন লাগিয়ে ও ভাঙচুর করে সবকিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দলীয় সভাপতির কার্যালয়ের মূল ভবনের প্রবেশমুখে ইস্পাতের তৈরি মূল গেটসহ অন্য ভবনগুলোর প্রবেশপথের লোহা ও কাঠের গেট এবং সব দরজা-জানালা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভবনগুলোর অধিকাংশ তলার দরজা ও জানালার কাচ ভেঙে ফেলা হয়। জানালার গ্রিল খুলে নিয়ে গেছে লুটকারীরা। চেয়ার-টেবিল, আলমারিসহ আসবাব এমনকি লোহা, স্টিলসহ ধাতব বস্তুও খুলে নিয়ে গেছে। আর ভেতরের ওয়াশরুম ও রান্নাঘরের আসবাব ভেঙে ফেলা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে এই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি ভবন আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। তবে সবকটি পোড়া ভবনের প্রবেশপথসহ ভেঙে ফেলা কয়েকটি দরজা-জানালার জায়গায় কাঠের বাটাম মেরে ও ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে বাইরের কারও এখন আর ভেতরে প্রবেশের সুযোগ নেই। কার্যালয়গুলোসহ সড়কে একদল পুলিশ পাহারা দিচ্ছে দিনরাত। তবে রাস্তাসংলগ্ন শেষ ভবনটির কিছু অংশ খোলা থাকায় নিচতলার দু-একটি কক্ষে ঢুকে মলমূত্র ত্যাগ করে কিছু লোক।

ভেতরে প্রবেশের সুযোগ না হলেও বাইরে দাঁড়িয়ে স্থানীয় দোকানদার ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনটি ভবনের প্রতিটি তলায় কাগজপত্রের পোড়া ছাই, ভাঙা কাচ এবং পানি-কাদায় একাকার হয়ে আছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত তিন তলা ভবনে অবশিষ্ট বলতে কিছু নেই। প্রকাশনা স্টলটিতে পুড়ে যাওয়া বিপুল সংখ্যক বইপত্রের আংশিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামনের সড়কের একজন চা বিক্রেতা জানান, গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট বেলা প্রায় ২টা পর্যন্ত এই কার্যালয়ে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের সঙ্গে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কার্যালয়টি পাহারায় ছিলেন। ছিলেন কার্যালয়ের কর্মচারীরা। তবে দুপুরের পর পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সবাই যার যার মতো সরে পড়েন। পরে বিকেল ৪টার কিছু আগে থেকে তিনটি ভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

এলাকার একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি জানান, গত ৫ আগস্ট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের দিন থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এসব কার্যালয় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে ছিল। সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ‘ট্রিপল এস’ নামের একটি সংগঠন আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছে। ওই ভবনের কয়েকটি কক্ষ পরিষ্কার করে ত্রাণসামগ্রী রেখেছিলেন তারা। পরে সবগুলো ভবনসহ গোটা এলাকায় পুলিশ পাহারা বসানো হয়। সে সময় থেকে প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করে জনসাধারণের প্রবেশ পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

 ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়

গত বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর  ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে দ্বিতল ভবনের এই কার্যালয়টি থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা হতো।

সেখানে নিচতলার একটি অংশ ব্যবহার করত ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। আরেকটি অংশ ব্যবহার করত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ। আর দ্বিতীয় তলায় ছিল মিলনায়তন। সেখানে আওয়ামী লীগের দিবসভিত্তিক আলোচনা সভাসহ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতো। আর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাসহ দিবসভিত্তিক আলোচনা সভাগুলোতে উপস্থিত থাকতেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সর্বশেষ নির্বাচনের সময় এই কার্যালয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং করতেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, স্টিলের অবকাঠামো ও কাচ দিয়ে নির্মিত আওয়ামী লীগের এই কার্যালয়টি ভাঙচুর করা হয়েছে। ভেতরের মালপত্র লুট করা হয়েছে। বর্তমানে শুধু স্টিলের অবকাঠামোটি কঙ্কালসার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর বাইরের গেট তালাবদ্ধ।

আশপাশের বাসিন্দারা জানান, ৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই কার্যালয়টিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলে। আরও দুই-তিন দিন পর্যন্ত দিনরাত চলেছে মালপত্র এবং স্টিল ও লোহার জিনিসপত্র লুট। পরে কার্যালয়টিকে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।

এসব ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল আমিন সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের বিষয়ে কেউ পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলা হয়নি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন সমকালকে বলেন, সংগঠনের কার্যালয়গুলো বন্ধ এবং অরক্ষিত অবস্থায় আছে। যেভাবে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাতে সেগুলো আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। দলীয় কার্যালয় সংস্কার বা খোলার বিষয়ে আমরা কারও সহযোগিতা চাই না। তবে দ্রুতই সেগুলো নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর হবে।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম ফায়ার ফাইটার নিহতের দায় নিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিরোনাম সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন শিরোনাম ফেনী জেলা যুবদলের কমিটির পদ পেতে জোর লবিং শিরোনাম বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না: আসিফ মাহমুদ শিরোনাম ভয় পেলেন না সোনাক্ষী-জহির, ক্যামেরার সামনেই ঘটালেন সাহসী কাণ্ড! শিরোনাম আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা