ইলিশের কিনতে গিয়ে অন্য মাছ কিনে ফিরছে মানুষ
বাগেরহাট শহরের সরুই এলাকার বাসিন্দা নিয়ামুল ইসলাম (৪০)। বেসরকারি একটি কোম্পানিতে মার্কেটিংয়ের কাজ করেন। সমুদ্রে নিষাধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ৫ দিন পরে বাজারে এসেছিলেন ইলিশ কিনতে। তবে আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে ইলিশের বদলে রুই কিনে বাসায় ফিরতে হয়েছে তাকে। নিয়ামুল বলেন, অবরোধ শেষে ইলিশ কিনতে আসছিলাম। কিন্তু দাম অনেক, তাই রুই মাছ কিনলাম। যে অবস্থা তাতে দাম না কমলে বেশিরভাগ মানুষ ইলিশ খেতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি।
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ইলিশের দাম। সরবরাহ কম থাকায় দামও অনেক বেশি, আকার ভেদে প্রতি কেজি ইলিশের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পাঁচ দিন পরেও দাম বেশি থাকায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাগরের মাছ না আসা এবং নদ-নদীতে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় দাম বেশি।
শুক্রবার বাগেরহাট শহরের প্রধান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, ৭-৮’শ গ্রামের ইলিশ ১২০০ টাকা, আধা কেজি ওজনের মাছ ১ হাজার টাকা, ৩ থেকে ৪টিতে কেজির মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৫-৬টিতে কেজির মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে।
ইলিশের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বাজারে থাকা অন্য মাছের উপরও। অন্যান্য মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও, দাম কমেনি একটুও। বরং, ভেটকি, রুই, কাতলা, চিংড়ি ও টেংরা মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। ভেটকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে, রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্পসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। হরিণা, চাকা ও চামি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। তবে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছের দাম আগের মতই ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নুরুন নাহার নামের এক চাকরিজীবী বলেন, এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশ ভাল বেতনে চাকরি করি। তারপরও অনেক হিসেব করে বাজার করতে হয়। পছন্দের মাছ ক্রয়ের আগে অনেক চিন্তা করতে হয়। তাই স্বল্প আয়ের মানুষরা ইলিশ ক্রয়ের কথা চিন্তাও করেন না। এজন্য ইলিশসহ বেশি দামের বড় মাছ কেটে টুকরো টুকরো করে বিক্রি করা হয়, তাহলে হয়তো অনেকেই এই মাছের স্বাদ নিতে পারত বলে মন্তব্য করেন এই নারী।
বাগেরহাট মাছ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল সালাম বলেন, ‘ইলিশের দাম আগের তুলনায় বেশি। ২২ দিনের অবরোধ শেষ হলেও জেলেরা সাগরের মাছ পাচ্ছেন না। সাগরে ডাকাতের প্রভাবও বেড়েছে। এখন বাজারে যে ইলিশ দেখছেন এগুলো সব পাশের জেলা বরিশালের বেকুটিয়াসহ বিভিন্ন নদীর মাছ। তাই দাম একটু বেশি।’ সাগরের মাছ আসা শুরু করলে দাম কমবে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে অবরোধের ৫ দিন পরেও শুক্রবার ভোরে বাগেরহাটের প্রধান সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেবি বাজার কোন ট্রলার আসেনি। যার কারণে কেবি বাজারে হিমায়িত সাগরের মাছ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান কেবি বাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী।
তিনি বলেন, সাগরে এবার মাছের পরিমাণ কম। তাই এখনও কোনও নৌকা আসেনি। তাই ইলিশ মাছের বেচাকিনি নেই, আমরা শুধু হিমায়িত মাছ বিক্রি করছি। এর কারণে বাজারে ইলিশের দাম বেশি।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com