ঢাকা, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

দেশব্যাপী গ্রেপ্তার অভিযান : আবারও ঘরবাড়িছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী

Publish : 06:05 AM, 25 July 2024.
দেশব্যাপী গ্রেপ্তার অভিযান : আবারও ঘরবাড়িছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী

দেশব্যাপী গ্রেপ্তার অভিযান : আবারও ঘরবাড়িছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী

রাজনৈতিক প্রতিবেদক :

ছয় মাসের মাথায় আবারও বাড়িছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আত্মগোপনে থেকেও রেহাই পাচ্ছেন না দলটির নেতাকর্মী। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামিনে কারামুক্তির কয়েক মাসের ব্যবধানে আবাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন তারা। অনেক নেতাকর্মীকে না পেয়ে তাদের স্বজনকে গ্রেপ্তারের অভিযোগও রয়েছে দলটির। তবে গ্রেপ্তারের পর নেতাকর্মীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করছেন বেশির ভাগ স্বজন। এ পরিস্থিতিতে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন অনেকে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশব্যাপী বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও নাজেহালের ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার তাদের পুরোনো এজেন্ডা অনুযায়ী একদলীয় শাসন কায়েম করার লক্ষ্য নিয়ে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত করছে। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্য সরকার নিজেদের রক্ষা করতে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতার বানোয়াট অভিযোগে বিএনপিসহ বিরোধী দল-মতের মানুষদের হয়রানির অপকৌশল গ্রহণ করেছে এই অবৈধ সরকার। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টানা আড়াই মাস সরকারবিরোধী আন্দোলন করে মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের পর এবার শুরু কোটাবিরোধী আন্দোলনে মামলার খড়্গ। উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপি নেতারা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় করা মামলায় আসামির তালিকায় বিএনপি নেতাকর্মীর আধিক্য। এজাহারে নাম না থাকলেও সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে নেতাকর্মীকে। গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, দলের কোষাধ্যক্ষ রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, বিএনপির নির্বাহী সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ।

নেতারা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনে দলের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা না থাকলেও নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে কোনো বাছ-বিচার চলছে না। গত ১৯ জুলাই নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি ও কার্যালয়ে তালা মেরে দেওয়ায় রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে তাদের। ফলে সারাদেশে কত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কতজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে কিংবা কতজনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান দলের কাছে নেই। কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী আত্মগোপনে থাকায় তারাও কোনো তথ্য জানাতে পারছেন না বলে নেতারা জানান। ফলে এক ধরনের অন্ধকারে রয়েছে দল। একইভাবে পরিবারের সদস্যরাও আছেন অনিশ্চয়তায়। কখন তাদের স্বজন গ্রেপ্তার হচ্ছেন, কখন কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, জানতে পারছেন না তারা। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানার চেষ্টা করলেও সেখানে রয়েছে নানান প্রতিবন্ধকতা।

গতকাল সকালে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরবের সহধর্মিণী মাহাবুবা খানম সমকালকে জানান, একটি বাসা থেকে নিরবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানতে পারেন। ভোর ৫টায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলেও তিনি জানতে পারেন আরও তিন ঘণ্টা পর। তবে কারা নিয়ে গেছে, কোন মামলায় নিয়েছে, তা তিনি জানতে পারেননি। তবে সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় হচ্ছে, গ্রেপ্তারের সময় তাঁকে খুব বেশি নির্যাতন করা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। দুপুরের পরপরই কারফিউ শিথিল হলে তিনি মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে ছুটে যান। তিন ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সহায়তা পাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, গত ২১ জুন এক বছরের বেশি কারাভোগ করে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জামিনে বেরিয়ে আসার এক মাসের মাথায় আবারও গ্রেপ্তার হতে হলো নিরবকে। তিনি অনেক অসুস্থ। ডিবি কার্যালয়ে তাঁর কাপড়চোপড়, নিয়মিত ওষুধ নিয়ে গেলেও তা দিতে পারেননি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাহাবুবা। 

তাঁর মতো করে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর স্বজনও গ্রেপ্তারের পর নির্যাতনের অভিযোগ করেন। এসব নেতাও দুই-এক মাস আগে জামিনে মুক্তির পর আবার কারাগারে গেলেন। বছরের পর বছর কারাগারে থাকায় ধ্বংস হতে চলেছে এসব নেতার আয়-রোজগার, পরিবার। 

দলের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, বয়োজ্যেষ্ঠ, অসুস্থ নেতাকর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী অপারেশনের রোগী। গত ৮ জুলাই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর একটি বড় অপারেশন হয়। সেই অপারেশনের সেলাই এখনও কাটা হয়নি। এ অবস্থায় তাঁকে রামপুরায় ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন’ ভবনে হামলায় করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিপুণের অবর্তমানে একমাত্র মেয়ের লেখাপড়া, জীবনযাপন এলোমেলো হয়ে পড়েছে বলে জানান পরিবারের অন্য সদস্যরা। 

এভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীর একেকটি পরিবার অনিশ্চয়তায় রয়েছে তাদের স্বজনের রাজনীতি, মামলা, গ্রেপ্তার আর নিয়মিত কারাগারে যাওয়ার ঘটনায়। অনেক পরিবার নিঃস্ব হতে চলেছে এসব  মামলার ভারে। 

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শিরোনাম ব্যাংক থেকে যত খুশি তোলা যাবে নগদ টাকা শিরোনাম নিউইয়র্কে ইউনূস-মোদির বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব শিরোনাম উপকূলে ঝড়ের শঙ্কায় তিন নম্বর সতর্ক সংকেত শিরোনাম স্টোরিতে কমেন্ট করার সুবিধা চালু করলো ইনস্টাগ্রাম শিরোনাম হাসপাতালে দীপিকা, আজই হতে পারেন সন্তানের মা!