আমিরাতে সুবাস ছড়াচ্ছে চট্টলার মেজবান
টেবিলের ওপর বাটিতে রাখা লাল টকটকে ঝোল মিশ্রিত গরুর মাংস, ছোলার ডাল, পায়ার ঝোল আর ভর্তা। এই পরিবেশনই বলে দেয়, এটি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি খাবার। এর সঙ্গে যোগ হওয়া বোরহানি আর সাদা ভাত চট্টলার মেজবানের ষোল আনা তৃপ্তি এনে দিচ্ছে সুদূর প্রবাসে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেশীয় হোটেলগুলোর ব্যবসায় লাভজনক মেন্যু হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে মেজবান। দেশটির বেশকিছু শহরে এটি এখন বাংলাদেশি হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিশেষ পদের খাবার হিসেবে বিবেচিত।
আমিরাতের বিভিন্ন শহর ঘুরে দেখা গেছে, দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে চট্টগ্রামের বাসিন্দা ৬৫ শতাংশের বেশি। এই সুবাদে দুবাই, শারজাহ, আবুধাবিসহ বেশ কিছু শহরে চট্টলার মেজবানের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। এই খাবারে মুগ্ধ বিদেশিরাও। প্রবাসীরা সপ্তাহের নির্দিষ্ট তিন দিন কেবল মেজবানির স্বাদ নিতে ভিড় করছেন সেসব হোটেল-রেস্তোরাঁয়। ভোজনরসিকদের আকর্ষণ বাড়াতে প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় ছোট-বড় ব্যানার-ফেস্টুনে এই খাবারের প্রচার করছে। দুবাইয়ের দেরা, শারজাহর রোলা, আবুধাবির মূল শহর ছাড়াও উপশহর মোচ্ছাফার কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁয় রয়েছে চট্টলার মেজবানের আয়োজন।
এ খাবারের স্বাদ পুরোপুরি ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী মাটির পাত্রে পরিবেশন করা হচ্ছে এ খাবার। ভিনদেশে দেশীয় ঐতিহ্যের উপস্থাপন বাড়তি নজরও কাড়ছে প্রবাসীদের। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মেজবানের নির্দিষ্ট খাবারের পাশাপাশি ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে বিনামূল্যে যোগ করেছে তরমুজের জুস, বিশেষ সালাদ ও রং চা। এমন আয়োজন রীতিমতো ভোজনরসিকদের আগ্রহ বাড়িয়ে চলেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টলার মেজবান ও ঘরোয়া আয়োজনে মাটির পাত্র ব্যবহারে প্রবাসীরা দেশীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া পাচ্ছেন। ভারী খাবারের পাশাপাশি চা, দই আর মিষ্টান্ন পরিবেশনেও ব্যবহার করা হচ্ছে মাটির পাত্র। দেশের এই ঐতিহ্য ভিনদেশিদেরও নজর কাড়ছে। তাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় হচ্ছে কয়েক গুণ।
দুবাইয়ের দেরা মেজবান বাড়ি হোটেলের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আঞ্চলিক এই খাবারের চাহিদা বিবেচনা করে চট্টলার মেজবান চালু করেন তারা। বর্তমানে সপ্তাহে ৪ দিন তাঁর প্রতিষ্ঠানে এই খাবারের স্বাদ নিতে পারেন প্রবাসীরা।
দুবাইয়ের মনপুরা রেস্টুরেন্টের মালিক সিরাজুল হক বলেন, মেজবানের খাবার আমিরাতে খুবই প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে। আমরা চেষ্টা করি সব সময় এটি রাখতে। প্রতি প্যাকেজের দাম ধরা হয় ২২ দিরহাম, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫০ টাকা।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াকুব সৈনিক বলেন, মেজবান চট্টগ্রামের ঐতিহ্য। আমিরাতের হোটেল-রেস্তোরাঁয় এ আয়োজনের কারণে একদিকে আঞ্চলিক খাবারের স্বাদ পাচ্ছেন প্রবাসীরা, অন্যদিকে ভিনদেশিদের কাছেও পরিচিতি পাচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com