বিশ্বকাপের আক্ষেপই তাতিয়েছে মেহেদিকে
বিজয় দিবসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনের অ্যান ভেলেতে টি২০ বিজয়ের ফুল ফোটে। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে স্বাগতিকদের ৭ রানে হারায় বাংলাদেশ। ক্যারিবীয় সফরে প্রথম টি২০ জয়ের নায়ক শেখ মেহেদি হাসান। টানা চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ জয়ের ভিত গড়ে দেন তিনি। ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন মেহেদি। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সবার ভেতরে জয়ের ক্ষুধা থাকায় জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করা সম্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন: নতুন বলে বল করা নিয়ে ড্রেসিংরুমের বার্তা কী ছিল?
মেহেদি: আমি সব সময় নতুন বলে বল করি। নিজের প্রসেস ঠিক রেখেই এগোচ্ছিলাম। যেহেতু তাদের ডানহাতি ব্যাটার ছিল, আমার পরিকল্পনা ছিল সহজে শটস খেলতে না দেওয়া। কারণ এই উইকেটে তারা অনেক শক্তিশালী। সেভাবেই পরিকল্পনা করে আমি বোলিং করেছি।
প্রশ্ন: এই জয়ের পর কি মনে হচ্ছে সিরিজ জেতা সম্ভব?
মেহেদি: অবশ্যই। আমরা টেস্ট সিরিজটা ভালোভাবে শেষ করেছি। ওয়ানডে সিরিজে ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু শেষটা ভালো হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ, বিজয়ের মাসে টি২০ জয় দিয়ে শুরু করলাম। সামনে আমাদের আরও দুটি ম্যাচ আছে। ভালো কিছু করার লক্ষ্যে সবাই প্রস্তুত আছে।
প্রশ্ন: পাওয়ার প্লেতে বোলিং করার জন্য কোনো টেকনিক নিয়ে কাজ করছেন?
মেহেদি: এটা মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। পেস বোলাররা যখন স্লগে বল করে, তা মেন্টালি। একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় মাত্র। আমি আমার প্রসেস মেনে চেষ্টা করি।
প্রশ্ন: ৬১ রানে ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার পরও গেমটা হাতছাড়া হচ্ছিল। শেষ ওভারে হাসানের ওপর কতটা বিশ্বাস ছিল?
মেহেদি: হাসান অসাধারণ বোলিং করেছে। আমার মনে আছে আয়ারল্যান্ডে হাসান একটি ম্যাচ জিতিয়েছিল স্লগে বল করে। আমার মনে ওই অনুভূতিটা কাজ করছিল। হাসানের নিজের বিশ্বাস ছিল কিনা জানি না। তবে আমার নিজের ভেতরে এই অনুভূতিটা ছিল, হাসান ম্যাচটি শেষ করবে।
প্রশ্ন: রোভম্যান পাওয়েল জুটি গড়ার পর ড্রেসিংরুম থেকে কী বার্তা গেছে মাঠে?
মেহেদি: আমি তো মাঠে ছিলাম এবং নিজের ফিল্ডিংয়ে মনোযোগ দিয়েছিলাম। এটা অধিনায়ক বলতে পারবে ড্রেসিংরুম থেকে কী বার্তা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি লিটন বলতে পারবে। তবে লিটন যেভাবে অধিনায়কত্ব করেছে, তা অসাধারণ। লিটন অনেক সাহস দেখিয়েছে। যে সময়ে যেটা করা দরকার, সেটা করেছে। একটি জুটিই ছন্দ বদলে দেয়। বোলারদের বেলাতেও তাই। দিন শেষে আমরা সফল হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ।
প্রশ্ন: লিটন রান পাচ্ছেন না। একজনের খারাপ সময়ে কীভাবে পাশে থাকেন?
মেহেদি: কেউ খারাপ খেললে বা ভালো খেললে আলোচনা হয় না। যে খারাপ খেলে সে জানে তার ভেতরে কী চলছে। তবে আমরা সবাই একজন আরেকজনকে সমর্থন করি। আশা করি, আগামী ম্যাচে সে ফিরে আসবে। একজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার পারফর্ম করলে আমাদেরই ভালো।
প্রশ্ন: আপনি টি২০ খেলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ওয়ানডে দলে জায়গা হয় না। এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ?
মেহেদি: দেখেন, টি২০ দলেও আমার জায়গা পাকা না। আমি নিয়মিত খেলার সুযোগ পাই না। দলের সমন্বয় অনুযায়ী খেলতে হয়। আমাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্য ছাড়া তো কোনো উপায় নেই।
প্রশ্ন: কোচ সালাউদ্দিন থাকায় আপনার কোনো লাভ হয়েছে?
মেহেদি: অবশ্যই। বাংলাদেশে আমি শীর্ষ পর্যায়ের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা শুরু করি তাঁর অধীনে। তিনি আমাকে ভালোভাবে জানেন। তিনি মাঠে থাকলে আমি অনেক আত্মবিশ্বাস বোধ করি। আমি কোনো ভুল করলে তখনই ধরতে পারেন এবং বার্তাও দেন। এ রকম একজন কোচ কাছে থাকলে মানসিকভাবে উজ্জীবিত থাকতে পারি।
প্রশ্ন: এই ম্যাচ জেতা কতটা কঠিন ছিল?
মেহেদি: আপনারা কি গ্যালারি ফিল করেছেন, যে আমরা আরামে জিতেছি। কষ্ট করেই জিতেছি। জেতার জন্য সবার অনেক ক্ষুধা ছিল। যে কারণে আমরা জিতেছি। আলহামদুলিল্লাহ।
প্রশ্ন: এই উইকেটে কি মিরপুরের উইকেটের ফিল ছিল?
মেহেদি: মিরপুরে একরকম উইকেট, এখানে আরেক রকম। আমরা যখন প্র্যাকটিস করছিলাম, তখন মনে হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ রানের উইকেট। তবে আপনি উইকেট হাতে রাখলে এখানেও ১৮০ বা ২০০ রান করা সম্ভব।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ এখানে বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ খেলেছে। আফগানিস্তানকে হারাতে পারলে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ ছিল। বিশ্বকাপের সেই অনুভূতি কি ভালো করতে প্রভাবিত করেছে?
মেহেদি: বিশ্বকাপের যে তিনটি ম্যাচ এখানে হয়েছিল, একটাও আমি খেলিনি। আমার আক্ষেপ হচ্ছিল, এ ধরনের উইকেটে খেলতে না পেরে। কারণ আমি এই উইকেটে ভালো করতে পারতাম। ওই জিনিসটা আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এ রকম উইকেট স্পিনারদের জন্য একটু সহায়তা করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com