ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

স্থায়ী কমিটির বৈঠক : ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় বিএনপি

Publish : 06:06 AM, 13 November 2024.
স্থায়ী কমিটির বৈঠক : ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় বিএনপি

স্থায়ী কমিটির বৈঠক : ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় বিএনপি

রাজনৈতিক প্রতিবেদক :

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় বিএনপি। দাবি আদায়ে এবার মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এ লক্ষ্যে ১০ সাংগঠনিক বিভাগে বড় সমাবেশ করার চিন্তাভাবনা চলছে। আগামী মাস থেকে এসব সমাবেশ শুরু হতে পারে। শিগগির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনায় চূড়ান্ত হবে সমাবেশের দিনক্ষণ। একই ইস্যুতে সমমনা দলগুলোকেও মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডের। তবে কোনোভাবেই সেই আন্দোলনকে চরম পর্যায়ে নেওয়ার চিন্তা নেই। আপাতত নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। 

বিএনপি মনে করছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা– এ দুই ইস্যুতে মাঠের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। 

বৈঠক সূত্র জানায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। এই অনুধাবন থেকেই দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হচ্ছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার মেয়াদের তিন মাসেও এ রোডম্যাপের বিষয়টি স্পষ্ট না করায় সামনে ডিসেম্বরের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে নতুন বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সোচ্চার হবে দলটি।

সূত্র জানায়, সেই আন্দোলনের আগে মতৈক্য তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে। এর অংশ হিসেবে দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত রয়েছে। 

জানা যায়, বৈঠকে দলের কেউ কেউ বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে অভিমত তুলে ধরেন। তারা বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির বরাবরই কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতনে তারা একসঙ্গে আন্দোলন করেছে। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগের দিন এক অনানুষ্ঠানিক সভায় শরিকদের ডেকে তৎকালীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেয় দলটি। জোট ভেঙে দেওয়ার পরও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ ছিল। ১০ দফা দাবিতে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে জামায়াত দুটি কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালন করলেও পরবর্তী সময়ে দলটি নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ছিল। 

৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসন, মাঠ প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদায়ন নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে নানা আলোচনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দল দুটির মধ্যে এক ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে বলে অনেক মনে করছেন। এ ক্ষেত্রে বিএনপিকে জামায়াত প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে কিনা, সে প্রশ্নও সামনে আসছে।  এমন প্রেক্ষাপটে জামায়াতের সঙ্গে যাতে কোনো দূরত্ব তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত বলে বৈঠকে অভিমত দেন বিএনপির কয়েক নেতা। তারা বলেন, বিশেষ করে নির্বাচন এবং জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে যাতে কোনো মনোমালিন্য কিংবা দূরত্ব তৈরি না হয়, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার। এ জন্য জামায়াতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার তাগিদ দেন নেতারা।

নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া– দুটিই সমান্তরালভাবে চলা উচিত। এ জন্য সরকারকে অবিলম্বে একটি রোডম্যাপ দিয়ে সামনে এগোনো দরকার। যতদিন পর্যন্ত এই রোডম্যাপ দেওয়া না হবে, ততদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার যে শঙ্কা রয়েছে, সেটা কাটবে না। 

তারা আরও বলছেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে। তবে সরকারের সব কার্যক্রমের ফোকাস হওয়া উচিত নির্বাচন। 

সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে সম্প্রতি তিনজনের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে দু’জনকে নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতাও প্রশ্ন তুলেছে এবং তারা আন্দোলন করছে। এ নিয়োগ নিয়ে বিএনপিও বিস্মিত। যথেষ্ট যাচাই-বাছাই ও চিন্তাভাবনা করে নিয়োগ দিলে এ বিতর্ক সৃষ্টি হতো না। তাই সরকারের উচিত যথাসম্ভব বিতর্ক এড়িয়ে সামনে অগ্রসর হওয়া। বিতর্কিত কাউকে সরকারে না রাখা এবং ভালোভাবে খোঁজখবর করে দায়িত্বে আনতে হবে। 

গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদও নির্বাচনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সরকারের প্রধান কাজ হলো, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু দেখা গেল, যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে আমরা সমর্থন করেছি, সামনেও করব। কিন্তু আপনারা আজীবন– ১০-২০ বছর ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবেন না।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির শোভাযাত্রা ও সমাবেশের মূল্যায়ন করেছেন নেতারা। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারা বলেন, এটি বিএনপির বিবেচনায় সর্বকালের সর্ববৃহৎ আয়োজন। শোভাযাত্রাটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়। কয়েক লাখ লোকের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, দলটি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি। সুতরাং বিএনপিকে বাইরে রেখে কিংবা এড়িয়ে কোনো কিছু করা যাবে না। তাছাড়া দলটি এ সরকারের বড় সহযোগী এবং সহায়ক শক্তি। তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। 

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম আ.লীগ আমলে দুর্নীতির শীর্ষে আমলারা এরপর রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ী শিরোনাম দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি শিরোনাম বাংলাদেশে ভ্রমণে যুক্তরাজ্যের সতর্কবার্তা শিরোনাম রাজধানীতে শ্রম ভবনে আগুন শিরোনাম ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা শিরোনাম ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের ফল হাইকমিশনে হামলা