বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা পাচার, ভারতে ইডির অভিযান
অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে অভিযান চালিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে এসব অভিযান চালানো হয়।
ভারতের ১৭ স্থানে অভিযান চালিয়েছে ইডি। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১২ স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝাড়খণ্ডের একটি মামলার সূত্র ধরে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যমগ্রাম এলাকার বাসিন্দা পিংকি বসু নামে এক নারীর সন্ধান পায় ইডি। ইডির অভিযোগ সাম্প্রতিক সময়ে শত শত কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করেছেন এই নারী।
বাংলাদেশ থেকে ঝাড়খণ্ডে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা নারীকে পাচারের বিষয়ে রাঁচির বারিয়াতু থানায় দায়ের করা একটি এফআইআর-এর ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গত সেপ্টেম্বরে একটি মামলা দায়ের করেছিল। অভিযোগ উঠেছে যে, পাচার হওয়া এসব নারী হিন্দু নামে আধার কার্ডসহ পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছে। ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পরিচালিত একটি বড় সিন্ডিকেটের বিষয়ে তদন্ত করছে ইডি।
মঙ্গলবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর পূর্ব পাড়া এলাকায় পিন্টু হালদারের বাড়িতে ইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা অভিযান চালায়। পেশায় ক্যাব ড্রাইভার পিন্টুর বাড়িতে ইডির চারজন প্রতিনিধি অভিযানে যান। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরেই এই তল্লাশি বলে জানা গেছে। স্বর্ণ, ক্রিকেট বেটিংসহ একাধিক হুন্ডির মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের সাথে পিন্টু হালদার যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি ওই জেলার হাবড়াতেও এক রেডিমেড পোশাক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। একটি প্রতিনিধি দল পার্থ সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীর ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি বাইরে থেকে ঘিরে রেখেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা।
মধ্যমগ্রামেও পিংকি বসু নামে এক নারী ফ্লাটে অভিযান চালিয়েছে ইডি। ভারতীয় মুদ্রাকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করে ফের সেই মুদ্রাকে ভারতীয় মুদ্রায় পরিবর্তন করতো বলে পিংকির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। কালো রুপিকে সাদা করার জন্য হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশে যোগাযোগ রাখতেন পিংকি। এর পাশাপাশি বারাসাত-সোদপুর রোডের ধারে বোর্ডঘর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন স্নো ফক্স বার কাম রেস্টুরেন্টেও ইডির অভিযান চলছে।
ইডির ধারণা পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ডে একটি বড় চক্র এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও অনুপ্রবেশ ইস্যুটি নির্বাচনী প্রচারণায় বড় আকার ধারণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাসহ প্রত্যেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) জোট সরকারকে নিশানা করেছেন। তাদের অভিযোগ ভোট ব্যাংক রাজনীতির কারণেই তারা বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। এমনকি অনুপ্রবেশের জন্য ঝাড়খণ্ডের জনবিন্যাসেও তারতম্য ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলের নেতারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com