ডলারের ছুতা তুলে আদা রসুনের ‘গলাকাটা’ দর
রান্নায় মসলার প্রধান উপকরণ আদা ও রসুন। কোরবানির ঈদের আগে মসলা দুটির ঝাঁজ বেড়েই চলেছে। এক মাসের ব্যবধানে আদা কেজিতে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা এবং রসুন সর্বোচ্চ ৪০ টাকা বেড়েছে। বিশ্ববাজারের দর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দেশে দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্য দুটি।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে যে পরিমাণ আদা ও রসুন উৎপাদন হয়, তা দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মেটে না। ফলে ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তবে বিশ্ববাজারে ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে। তাতে পাইকারি বাজারে প্রতিদিনই একটু একটু করে আদা-রসুনের দাম বাড়ছে।
খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনন্দিন বাজার দরের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এক মাসে অস্বাভাবিক দর বেড়েছে পণ্য দুটির। সংস্থাটির তথ্যমতে, এক মাস আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৮০ এবং আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। তবে টিসিবির গতকালের তথ্যে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৯০ থেকে ২২০ এবং আমদানি করা রসুন ২১০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের কেজিতে ৪০ এবং আমদানি করা রসুনের কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
আমদানির ৯০ শতাংশ রসুন আসে চীন থেকে। চীনের গণমাধ্যম মেইড ইন চায়নার তথ্য বলছে, বর্তমানে প্রতি টন সাধারণ মানের রসুনের দর ৮০০ ডলার। টাকায় (প্রতি ডলার সমান ১১৭ টাকা) হিসাব করলে প্রতি কেজির আমদানি দর দাঁড়ায় প্রায় ৯৪ টাকা। এর সঙ্গে অন্য খরচ ও মুনাফা যোগ করলেও ১৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।
রসুনের মতোই আদার দরেও ভেলকি চলছে। টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাস আগে বাজার থেকে দেশি আদার কেজি কেনা গেছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। তবে গতকাল দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে। আমদানি করা আদার দর এক মাস আগে ছিল ১৯০ থেকে ২৫০ টাকা, যা গতকাল বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে দেশি আদা ২৫০ এবং আমদানি করা আদার দর বেড়েছে ৩০ টাকা। আদারও বড় অংশ আসে চীন থেকে। দেশটিতে আদার টন এখন ১ হাজার ডলারের কিছু বেশি। টাকার হিসাবে প্রতি কেজির দর ১১৭ টাকার কিছু বেশি।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্য বলছে, বছরে রসুনের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬ লাখ টন। দেশে যে পরিমাণ উৎপাদন হয়, এর পাশাপাশি বছরে ২০ শতাংশের বেশি রসুন আমদানি করতে হয়। অন্যদিকে, বছরে আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ টন। দেশে উৎপাদন হয় ১ লাখ ৯২ হাজার টন। পুরো চাহিদা মেটানোর জন্য ৪৫ শতাংশের মতো আমদানি করা লাগে।
গতকাল বিকেলে ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে দুই কেজি রসুন কেনার পর বেসরকারি চাকরিজীবী সাইফুর রহমান চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ডলারের ছুতা দিয়ে আমদানির দ্বিগুণ দামে রসুন বিক্রি করছে। অনলাইনের যুগে এখন চাইলে যে কোনো সময় বিশ্ববাজারের দর জানা যায়। বাজার তদারকির অভাবে ক্রেতারা পিষ্ট হচ্ছেন– এটাই মূল কথা।’
এদিকে কাঁচামরিচের বাজার আরও চড়েছে। গতকাল ঢাকার হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। মাসখানেক আগে মরিচের কেজি ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com