চালের বাজার এখনও চড়া : জোগান ভালো, তবু ইলিশের চড়া দাম
মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে ইলিশের জোগান বেড়েছে বেশ। তবে ক্রেতা-বিক্রেতার দামের যোগ-বিয়োগ মিলছে না। ইলিশ মৌসুম, দাম তো কম থাকার কথা– এ ধরনের অঙ্ক কষে যারা বাজারে যাচ্ছেন, তারা ফিরছেন নিরাশ মুখে। বাজার ভরা ইলিশ থাকলেও দাম সেই বল্গাহীন। এদিকে মাস দেড়েক আগে দর বাড়ার পথে হাঁটা চালের বাজারেও নেই স্বস্তির বার্তা। তবে সরকার পতনের পর থেকেই কিছুটা নাগালে সবজির দাম।
ভোক্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর বাজার ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি কমেছিল। এর বেশ প্রভাব দেখা গেছে সবজির বাজারে। তবে অন্য পণ্যে প্রভাব নেই। আগের মতোই বাড়তি দরে চলছে বেচাকেনা।
ইলিশে নিরাশা
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজির কিছুটা বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়। কমবেশি ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি কিনতে লাগবে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনা যাবে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
বরিশাল ও লক্ষ্মীপুর থেকে ইলিশ এনে পাইকারি দরে বিক্রি করেন সাইদুল ইসলাম। ভরা মৌসুমে দাম কেন বেশি– জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদীতে যেভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ার কথা, সেভাবে মিলছে না। তাছাড়া মাছের চাহিদা তো কমছে না, দিন দিন বাড়ছে।
তবে ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় অন্য মাছের চাহিদা কমেছে। তাতে দামও খানিকটা কম দেখা গেছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ১৫ থেকে ২০ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। মাঝারি আকারের পাঙাশ মাছের কেজি ১৮০ থেকে ২২০, চাষের কইয়ের কেজি ২১০ থেকে ২৪০ ও তেলাপিয়ার কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মাঝারি আকারের রুই ও কাতলা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে পাবদার কেজিতে খরচ করতে হবে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। চিংড়ির দামে হেরফের নেই। আগের মতোই মানভেদে মাঝারি আকারের চিংড়ির কেজি কেনা যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায়।
চালের বাজারে দুশ্চিন্তা
চালের বাজারে ক্রেতার দুশ্চিন্তা এখনও আছে। দেড় মাস আগে বেড়ে যাওয়া বাজারে দর কমার কোনো লক্ষণ নেই। গত সপ্তাহের মতোই মোটা চালের কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মানভেদে সরু চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৭৮ টাকা দরে। মাস দেড়েক আগে মোটা চাল ৫০ থেকে ৫৩ ও মাঝারি চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর সরু চালের কেজি ছিল ৬২ থেকে ৭৬ টাকা।
অন্য পণ্যের দরদাম
গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দর। গতকাল ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকায়। অপরিবর্তিত সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। গেল সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে কিছুটা কমেছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা।
আলু গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ এবং পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো দেশি রসুন ২০০ থেকে ২৩০ এবং আমদানি রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সবজিতে কিছুটা স্বস্তি
৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পটোলের কেজি। পটোলের মতো বেশির ভাগ সবজির দাম নেমেছে অর্ধেকের কাছাকাছি। এক মাস আগের ১৫০ টাকার বেগুন ও উচ্ছের কেজি এখন কেনা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। তবে মাসখানেক আগে এ দর ছিল ১০০ টাকার আশাপাশে। কাঁচামরিচ কেনা যাচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে।
চট্টগ্রামে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে ডিম
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে শৈবাল আচার্য্য জানান, সেখানে এখনও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে ডিম। ব্যবসায়ীদের তথ্য বলছে, পাহাড়তলী বাজারে গতকাল এক হাজার ডিম বিক্রি হয় ১১ হাজার ৭০০ থেকে ১১ হাজার ৮০০ টাকায়। এর সঙ্গে আছে শ্রমিক খরচ। এ হিসাবে পাইকারিতে প্রতিডজন ডিমের দাম পড়ছে ১৪২ থেকে ১৪৫ টাকা। অথচ এর কয়েক কিলোমিটার দূরে নগরের বহদ্দারহাট খুচরা বাজারে প্রতিডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। চট্টগ্রাম নগরের অন্যান্য খুচরা বাজারেও একই দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। আর পাড়া-মহল্লা ও অলিগলির দোকানে একই ডিম প্রতিডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। এর আগে সাম্প্রতিক বন্যায় চট্টগ্রামে কোথাও কোথাও ডিমের ডজন ১৮০ টাকায় ঠেকেছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com