বাণিজ্যমেলায় নজর কাড়ছে কারাবন্দিদের হস্তশিল্প
অপরাধ করার পর সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দিরা অবসর কাটান কিভাবে? তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিভাবে জোগাড় করেন? অনেকেরই জানার কৌতুহল থাকে। দেশের বেশিরভাগ কারাগারগুলোতে লম্বা সময়ের সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দিরা প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সশ্রম দণ্ডিত বন্দিরা কারাগারে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাঁশ-বেত দিয়ে তারা তৈরি করে নানা দৃষ্টিনন্দন পণ্য। কেউ কেউ পাট ও চামড়া দিয়ে বুনেন বাহারি পণ্য। কেউ কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করতে পারে।
আর তাদের তৈরি এসব পণ্য বিক্রি হয়। সেই বিক্রিত পণ্যের লভ্যাংশ থেকে তাদের পারিশ্রমিক দেয়া হয়। যা দিয়ে কারাবন্দিরা নিজেদের জন্য খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেন। এভাবেই তারা স্বাবলম্বী হয়ে কারাভোগের পর নিজেই একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নেন।
কারাবন্দিদের তৈরি সেসকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। দেশের ৩৮টি কারাগারের বন্দিদের হাতে তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্যমেলায়। এ জন্য ‘বাংলাদেশ জেল, কারা পণ্য’ নামে একটি প্যাভিলিয়ন সাজানো হয়েছে। যেখানে বিক্রি হচ্ছে বাঁশ, বেত, কাঠ, সুতো ও পাট দিয়ে বন্দিদের হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্য। এসব হস্তশিল্প, কার্পেট ও শোপিস মুগ্ধ ক্রেতারা। ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দেখা যায়, মেলা আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থী একবারের জন্য হলেও ঢুঁ মারছেন এই প্যাভিলিয়নে। কিনছেন সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পণ্যটি। বন্দিরা বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি করেছেন মোড়া, শোপিস, ব্যাগ, বসার সোফা। পাটের ব্যাগ, পাপোশ-কার্পেট তৈরি করেছেন। ভিন্নতা থাকায় এসব পণ্যে আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা। আর এসব দৃষ্টিনন্দন পণ্য তৈরি করেছেন সশ্রম কারাবন্দিরা।
প্যাভিলিয়নটিতে পাট ও কাঠের তৈরি টেবিল-চেয়ার ও শো-পিস ছাড়াও আছে জুতা, বিছানার চাদর, কুলাসহ গৃহসজ্জার নানা পণ্যের সম্ভার। এসব পণ্যের বেচা-বিক্রিও বেশ ভালো।
প্যাভিলিয়নে গিয়ে জানা যায়, বেতের মোড়া ৮০০-১০০০ টাকা, ঘর সাজানোর ফুল ও ফুলের ঝুড়ি ২০০-৫০০ টাকা, উলের গেঞ্জি ও টি-শার্ট ২০০-৫০০ টাকা, বাটিক ও জামদানির থ্রি পিস ৫০০-৪০০০ টাকা দাম পর্যন্ত রয়েছে।
মেলায় আসা এক গৃহিণী বলেন, পণ্য দেখতে ভালো। টেকশই মনে হচ্ছে। দামও কম। এটা আমাদের কারাগারে থাকা ভাই-বোনের বানিয়েছেন। তারা অবসর সময়টা ভালো কাজে লাগাচ্ছেন।
প্যাভিলিয়নে মামুন নামের একজন ডেপুটি জেলার বলেন, আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা এই কাজগুলো করেছেন। এসব পণ্যের মান ভালো। ক্রেতাদের কারাপণ্যের প্রতি ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
প্যাভিলিয়ন সংশ্লিষ্টরা জানান, কারাগারে প্রত্যেক বন্দিরই একটা ক্যাশ থাকে। পণ্য বিক্রি করে লাভের একটা অংশের টাকা সেখানে জমা দেওয়া হয়। এই টাকা দিয়ে বন্দিরা খাবার কিনে খেতে পারেন, কিংবা আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবীকে দিতে পারেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com