ঢাকা, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Banglar Alo

কাপ্তাই হ্রদের প্রাণ ফেরাতে আসছে পাউবোর প্রকল্প

Publish : 11:15 AM, 14 January 2025.
কাপ্তাই হ্রদের প্রাণ ফেরাতে আসছে পাউবোর প্রকল্প

কাপ্তাই হ্রদের প্রাণ ফেরাতে আসছে পাউবোর প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ধুঁকতে থাকা কাপ্তাই হ্রদের প্রাণ ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এরই মধ্যে রাঙামাটির ‘কর্ণফুলী ও সংযুক্ত নদীসমূহের টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ নামে ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে সাড়ে চার বছর। চলতি জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলবে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। 

প্রকল্পের মাধ্যমে কাচালং, রাইখিয়ং, শিলকসহ ১৩ নদী-খাল খননের মাধ্যমে হ্রদে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে সারাবছর কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে নৌযান চলাচলের পথ সুগম করা হবে। এ ছাড়া নাব্য বাড়ানো, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, মৎস্য-কৃষি উৎপাদন বাড়ানোসহ ছয় ধরনের কাজের সমন্বিত পরিকল্পনা রয়েছে পাউবোর। 

প্রকল্পের খাতভিত্তিক কাজের ওপর প্রথম যাচাই সভা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয় গত ১৬ আগস্ট। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮৫৩ কোটি টাকার ডিপিপি কাটছাঁট করে নামিয়ে আনা হয় ৬৯৬ কোটি টাকায়। পরে নতুন করে ৬৯৬ কোটি টাকার ডিপিপি গত ১০ নভেম্বর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও পাবর্ত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পাউবো চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, কাপ্তাই হ্রদ, কর্ণফুলীসহ ১৩ নদী-খালের টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মোডিলিংয়ের (আইডব্লিউএম) সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে একগুচ্ছ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের প্রাণ ফেরাতে ৬৯৬ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমে চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় কোটি মানুষ লবণাক্ত পানি নিয়ে যে সংকটে আছেন, তাও দূর হবে। বছরজুড়েই সচল থাকবে রাঙামাটি সদরের সঙ্গে পাঁচ উপজেলার নৌ যোগাযোগ, যা এখন নাব্য সংকটের কারণে বছরে আট মাস বন্ধ থাকে।  

পরিবেশবিদ ও গবেষক ড. ইদ্রিস আলী বলেন, কাপ্তাই হ্রদ মানবসৃষ্ট কারণে সংকটাপন্ন। এর ফলে অনেক মাছ বিলুপ্তির পথে হাঁটছে। নাব্য না থাকায় নৌ যোগাযোগও ব্যাহত হচ্ছে। বহুমুখী সংকট থেকে মিঠা পানির এই হ্রদ বাঁচানো জরুরি।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি চট্টগ্রাম শহরের মানুষকে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করে ওয়াসা। তবে শুষ্ক মৌসুমে এ দুই নদীতে পানি কমে যাওয়ার ফলে লবণাক্ততা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ে। তখন আমাদের কাপ্তাই হ্রদের মিঠা পানির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। হ্রদের পানি পেলে আমরা লবণাক্তমুক্ত পানি শহরবাসীকে সরবরাহ করতে পারি। 

১৩ নদী-খালের প্রাণ ফেরাতে বাধা ৯১ কিলোমিটার

খরস্রোতা কাচালং নদী ভারতের মিজোরাম থেকে সাজেক অববাহিকা হয়ে নেমে এসেছে। এক সময় নদীপথে নৌকা নিয়ে সাজেকের মাচালং খাল মুখ পর্যন্ত মানুষের আসা-যাওয়া ছিল। বাঘাইছড়ি থেকে লংগদুর মাইনীমুখ পর্যন্ত নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে নদী পার হয় মানুষ। এ নদীর ৪৭ কিলোমিটার খনন করে ৬৯ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে পাউবো। এতে খরচ হবে ১৯৯ কোটি টাকা। একইভাবে কাপ্তাই হ্রদের রাইখিয়ং নদীর ১১ কিলোমিটার খননে ৭৬ কোটি টাকা, শিজক নদীর ৯ কিলোমিটার খননে ৭০ কোটি টাকা লাগবে। এ ছাড়া হ্রদে সংযুক্ত আরও ১০টি খালে ২৬ কিলোমিটার খননে ৩২ কোটি টাকা খরচ করা হবে।  

বরকলে সীমান্তবর্তী ভূখণ্ড রক্ষায় প্রতিরক্ষা বাঁধ

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বরকলের ঠেগামুখ বাজার ও বিওপি-সংলগ্ন এলাকায় নদী ভেঙে বাংলাদেশে ভূখণ্ড ভারতের সীমানায় চলে যাচ্ছে। তাই ঠেগামুখ বাজার এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পাউবো। এ ছাড়া কাচালং নদী, শিজক, রাইখিয়ং নদী তীরবর্তী ১২ কিলোমিটার ভাঙনপ্রবণ তীর ও লেকের পাড়ের ৩৬টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, রাস্তাঘাট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষায় কাজ করবে প্রতিষ্ঠানটি। খরচ ২৮৮ কোটি টাকা। 

বছরে ৮ মাস বন্ধ যোগাযোগ

কাপ্তাই হ্রদঘেরা নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলার সঙ্গে রাঙামাটি সদরের মানুষকে নৌপথে আসা-যাওয়া করতে হয়। তবে পানি শুকিয়ে গেলে বছরে আট মাস বন্ধ থাকে অন্য উপজেলার সঙ্গে নৌ যোগাযোগ। 

হ্রদের পানি কোটি মানুষের ভরসা 

শুষ্ক মৌসমে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি কমে গেলে বঙ্গোপসাগর থেকে লবণাক্ত পানি বাড়তে থাকে এ দুই নদীতে। তখন চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের এলাকায় পানিতে লবণাক্ততা বাড়ে। ওই সময় কাপ্তাই হ্রদ থেকে মিঠা পানি কর্ণফুলী নদীতে ছাড়া হলে লবণাক্ততার মাত্রা কমে আসে। তাই শুষ্ক মৌসুমে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর লবণাক্ততা ঠেকাতে কাপ্তাই হ্রদের পানি সংরক্ষণে গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষায়। 

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসার ঘোষণা দিলেন হাসনাত শিরোনাম শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ফাঁসির ৯ আসামিসহ সবাই খালাস শিরোনাম শাহরুখপুত্র আরিয়ানকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ব্রাজিলিয়ান প্রেমিকা লেরিসা শিরোনাম অ্যান্টার্কটিকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চীনা এআই রোবট-কুকুর শিরোনাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সদস্য সচিবের পদ স্থগিত শিরোনাম গাজা উপত্যকা দখল করবে যুক্তরাষ্ট্র, বলছেন ট্রাম্প