ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

বেশি দুর্নীতি পাসপোর্ট সেবায়

Publish : 09:55 AM, 04 December 2024.
বেশি দুর্নীতি পাসপোর্ট সেবায়

বেশি দুর্নীতি পাসপোর্ট সেবায়

নিজস্ব প্রতিবেদক :

আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সেবা খাতে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকার ঘুষ লেনদেন হয়েছে। গত বছর এ খাতে সার্বিকভাবে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ খানা বা পরিবার দুর্নীতির মুখোমুখি হয়েছে। সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত তিনটি খাত হচ্ছে পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। এ ছাড়া গত বছর ঘুষ দিতে হয়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ পরিবারকে (খানা)। সর্বোচ্চ ঘুষ লেনদেন হয়েছে বিচারিক, বীমা ও ভূমি সেবা খাতে।

গতকাল মঙ্গলবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত ‘সেবা খাতে দুর্নীতি; জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারের টিআইবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ খানা জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আট বিভাগের ১৫ হাজার ৫১৫টি পরিবারের তথ্য জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ মে থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত জরিপ চালানো হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ঘুষ ও দুর্নীতি হয়েছে বরিশাল বিভাগে। জরিপের প্রতিবেদনে ঘুষ ও দুর্নীতি রুখতে টিআইবির পক্ষে ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

জরিপের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ১০টি জাতীয় খানা জরিপের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সেবা খাতে উল্লিখিত পরিমাণ ঘুষ লেনদেনের তথ্য জানা গেছে। 

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়াই যেত না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অনেকের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে এ সরকারের মেয়াদেও  সবকিছু সম্ভব হবে না। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার একটা দৃষ্টান্ত রেখে যেতে পারে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখনও দুর্নীতিবাজদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করা হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তাদের শাস্তি দিতে হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ মনে করে দুদক একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠান। সারাবিশ্বে দুদকের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে। এর বড় প্রমাণ, মাত্র শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ মানুষ দুদকে অভিযোগ দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরেন টিআইবির গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরে আলম মিল্টন, আবদুল হান্নান সাকিদার প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন টিআইবির কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় গবেষণায় সহায়তাকারী বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যসহ টিআইবির অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

যা বলছে টিআইবির জরিপ

টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার হওয়া খানার হার ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে খানাপ্রতি ঘুষ দিতে হয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২ টাকা। এর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘুষ দিতে হয়েছে ভূমির সেবায়, যার পরিমাণ ১১ হাজার ৭৭৬ টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকিং সেবায় ৬ হাজার ৬৮১ টাকা, বিআরটিএ সেবায় ৬ হাজার ৬৫৪ টাকা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সেবায় ৫ হাজার ২২১ টাকা খানাপ্রতি ঘুষ দিতে হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ঘুষ আদায়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অব্যাহত রয়েছে। উচ্চ আয়ের চেয়ে নিম্ন আয়ের খানার ওপর দুর্নীতির বোঝা অপেক্ষাকৃত বেশি। সেবা নিতে গিয়ে উচ্চ আয়ের চেয়ে নিম্ন আয়ের খানা তাদের বার্ষিক আয়ের অপেক্ষাকৃত বেশি অংশ ঘুষ দিতে বাধ্য হয়।

জরিপে ওঠে এসেছে, ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ খানা অভিযোগ জানানোর পদ্ধতি বা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানে না এবং দুর্নীতির শিকার খানাগুলোর মাত্র ৮ দশমিক ৫ শতাংশ অভিযোগ করেছে। ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ খানা জানিয়েছে অভিযোগ জানানো হলেও প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ ঘটনায় কোনো অভিযোগ নেয়নি প্রতিষ্ঠানগুলো।

৯ দফা সুপারিশ

জরিপ প্রতিবেদনে টিআইবির পক্ষ থেকে ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সেবা খাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, সেবা পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা, সেবাদানকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সেবাদাতার জন্য যুগোপযোগী আচরণবিধি প্রণয়ন, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে পদোন্নতি এবং পদায়নের পাশাপাশি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পদোন্নতি, পদায়ন ও পুরস্কার বন্ধ করা, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বার্ষিক সম্পদ বিবরণী হালনাগাদ করে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, কোনো সমস্যা নেই শিরোনাম অপপ্রচার রোধে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শিরোনাম ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি, তাদের ষড়যন্ত্রও মোকাবিলা করবো শিরোনাম বাংলাদেশকে দুর্বল নতজানু শক্তিহীন ভাবার অবকাশ নেই শিরোনাম ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সব দল মিলে সমাবেশ প্রস্তাবনা শিরোনাম দু-একদিনের মধ্যে সুখবর পাবেন