২৮টি বিয়ে ও ডিবির হারুনকে নিয়ে বোমা ফাটালেন অভিনেত্রী রোমানা
মডেল-অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণা। ছোট ও বড় পর্দা দুই মাধ্যমে দুটি পরিচয়েই সমানভাবে পরিচিত তিনি। ২০২১ সালে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। স্বামী কামরুল হাসান জুয়েলের করা মামলায় গ্রেফতারের পর সে সময় গণমাধ্যমে যা এসেছিল, প্রকৃত ঘটনা তার পুরোপুরি উল্টো বলে দাবি করেছেন এ অভিনেত্রী।
২০১৯ সালে ক্যারিয়ারে যখন সুসময় তখন অভিনেত্রী বিয়ে করেন কামরুল হাসান জুয়েলকে। তবে বিয়ের পরপরই বেরিয়ে আসে স্বামীর আসল রূপ। তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব এক পর্যায়ে গড়ায় মামলায়।
১ কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণা। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয় রোমানা স্বর্ণার মা আশরাফুল ইসলাম শেইলি ও ছেলে আন্নাফিকে। রোমানা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলা করেন রোমানা স্বর্ণার দ্বিতীয় স্বামী কামরুল ইসলাম জুয়েল। এরপর বাদী নিরুদ্দেশ হয়ে যান বলেই শোনা যায়।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন স্বর্ণা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ ও সৌদিপ্রবাসী কামরুল হাসান জুয়েলের করা মামলায় অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণার কারাভোগের প্রতিবাদে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রোমানা স্বর্ণা বলেন, ‘এক বন্ধুর মাধ্যমে জুয়েলের সঙ্গে পরিচয় হয়। আমাকে মিথ্যা বলে জুয়েল বিয়ে করেছিল। সে তার আগের বউয়ের কথা গোপন রেখে বিয়ে করে। এসব জানার পরই বৈবাহিক জীবনে নেমে আসে অশান্তি ও নির্যাতন। একটা পর্যায়ে তার সঙ্গে ঘর না করার সিদ্ধান্ত নিই। নির্যাতনের জন্য কয়েকবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেও লাভ হয়নি। বিয়ের আগে বলেছিল, অভিনয় করলে অসুবিধা নেই। কিন্তু বিয়ের পর দেখা যায় উল্টো চিত্র। আমাকে অভিনয় করতে দেয়নি।’
স্বর্ণার ভাষায়, ‘বিয়ের পর মায়ের বাসায় থাকতাম। একবার আমার প্রথম ঘরের সন্তানকে শুটিং থেকে অপহরণ করে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় হুমকি দিত। দুবার তাকে ডিভোর্স দিই। শেষ পর্যন্ত আমাকে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানি করে। ডিভোর্স তুলে নিলে মামলা তুলে নেবে—এমন শর্তও দেয়া হয়।’
স্বর্ণা অভিযোগ করে বলেন, তৎকালীন ডিবির প্রধান হারুন জুয়েলের অপকর্মে সহযোগিতা করতেন। তাই উপায় না থাকায় একপর্যায়ে তিনি সমঝোতা করেন। মামলা তুলে নেন।
স্বামীর ক্ষমতার বিষয়ে অভিনেত্রী স্বর্ণা বলেন, ‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া, ডিবি হারুন জুয়েলকে সহযোগিতা করতেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলতেন। সেই টাকা জুয়েলের মাধ্যমে সৌদি আরব পাচার করতেন। এসব কথা আমাকে বলেছিল যখন সম্পর্ক ভালো ছিল। তার কাছে অনেক মেয়ে পাঠাত। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবৈধ কাজে সহযোগিতা করত। বিনিময়ে পেত মোটা অঙ্কের টাকা। জুয়েল মূলত হুন্ডির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হারুনের টাকা বিদেশে পাচার হতো জুয়েলের মাধ্যমে।’
২৮টি বিয়ে স্বর্ণা বলেন, ‘জুয়েল আমার দ্বিতীয় স্বামী। তবে আমার নামে মামলাসহ ২৮টি বিয়ে করার কথা রটানো হয়েছিল, যেগুলো ভিত্তিহীন। এই বিয়েগুলোর প্রমাণ আজও দিতে পারেনি। আমি এখনো চ্যালেঞ্জ করে বলছি আপনারা প্রমাণ করুন। র্যাব তদন্ত করে বের করুক কোথায় আছে আমার ২৮টা বিয়ে। আমি পারসোনালি কোনো নেতাকে কাজে লাগাইনি, যদি সেটাই হতো তাহলে দুই একটি মন্ত্রী আমার পকেটেও থাকতো। কারণ আমি একজন সেলিব্রেটি ছিলাম।’
রোমানা স্বর্ণা অভিনীত সর্বশেষে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘পদ্ম পাতার জল’ ও ‘রান আউট। ২০১৫ সালে সিনেমা দুটি মুক্তি পায়। এতে অভিনয় করে দর্শকের নজরও কেড়ে ছিলেন এই অভিনেত্রী। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘আউট অব দ্য বক্স’।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com