ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

বই নতুন কারিকুলামের, পরীক্ষা হবে পুরনোতে

Publish : 03:43 AM, 13 October 2024.
বই নতুন কারিকুলামের, পরীক্ষা হবে পুরনোতে

বই নতুন কারিকুলামের, পরীক্ষা হবে পুরনোতে

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চলতি শিক্ষাবর্ষের জুলাই পর্যন্ত মাধ্যমিক স্কুলগুলোয় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলেছে নতুন কারিকুলামের ‘যোগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়ন’ ব্যবস্থায়। নতুন নিয়মে ষাণ্মাসিক মূল্যায়নও হয়। এরপর এক মাসেরও বেশি সময় রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। সর্বশেষ, বছরের নবম মাসে এসে নতুন সিদ্ধান্ত হয় যে, ২০১৪ সালের পুরনো কারিকুলামের সৃজনশীল পদ্ধতিতে সামনের বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এমন সিদ্ধান্তে শ্রেণিপাঠ আত্মস্থ করতে শিক্ষার্থীদের গলদঘর্ম হওয়ার উপক্রম। শিক্ষাবিদদের পরামর্শ, শিক্ষাপদ্ধতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো এত দ্রুত না নিয়ে বরং সময় নিয়ে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া উচিত।

২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া নতুন কারিকুলাম নিয়ে অভিভাবকমহলে ব্যাপক সমালোচনা ছিল শুরু থেকেই। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ২৩ দিনের মাথায় অর্থাৎ শিক্ষাবর্ষের নবম মাসে এসে এ কারিকুলাম বাস্তবায়ন বন্ধ করে আগের নিয়মে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এক কোটি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলছেন, দুই মাস পরই বার্ষিক পরীক্ষা। এ পরীক্ষার জন্য যে সিলেবাস নির্ধারণ করে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), তা শিক্ষার্থীদের জন্য শেষ করা কঠিন। পাশাপাশি মুখস্থ করে লেখার অভ্যাসও ভুলে গেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে চাপে পড়েছে তারা।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জিন্নাত আরা বেগম। তিনি দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, বাচ্চাদের হাতে খুব অল্প সময়, অক্টোবর ও নভেম্বর মাস। এ সময়ের জন্য এই সিলেবাস বেশি হয়ে গেছে। বাচ্চারা এখন মুখস্থ করতে পারছে না। বড় বিষয় হলো, তারা এতদিন একটা পদ্ধতি চর্চা করে আসছে, এখন হঠাৎ ভিন্ন পদ্ধতির পরীক্ষার ঘোষণায় ঘাবড়ে যাচ্ছে।

তার কথার সঙ্গে মিল পাওয়া গেল জুবলি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাবাসসুমের কথায়। সে জানায়, গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করেছে। সেখানে মুখস্থ করার বিষয় ছিল না, সবই হাতে-কলমে। এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্তও তা-ই ছিল। নতুন সরকার এসে বলছে, ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগের নিয়মে। হঠাৎ পুরোদমে পড়া মুখস্থ করতে গিয়ে ওর হিমশিম অবস্থা।

রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আবদুস সালাম বলেন, ওরা (শিক্ষার্থীরা) তো পড়াই ভুলে গেছে। এত সিলেবাস দিলে পড়বে কীভাবে? এছাড়া বই এক শিক্ষাক্রমের, প্রশ্ন হবে আরেক শিক্ষাক্রমের। এটাও তো হাস্যকর। সরকারের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে বাচ্চাদের হয়রানি ছাড়া কিছুই হবে না।

তবে সমস্যা দেখছেন না শিক্ষকরা। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের সহকারী শিক্ষক শামসুজ্জামান মোল্লা বলেন, অভিভাবকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু এ বছর শিক্ষাক্রমটা বাতিল করা হয়েছে। এনসিটিবি ও মাউশির নির্দেশনা মেনে আমরা খুব সহজভাবে শিক্ষার্থীদের একটা টেস্ট (পরীক্ষা) নেব।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, একটি কারিকুলাম প্রণয়ন করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আবার বাতিল করার ক্ষেত্রেও তা সময় নিয়ে করা উচিত। শিক্ষার বড় অংশীজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রশাসন। তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। নীতি সিদ্ধান্তের প্রভাবে শিক্ষায় যে বড় লাভ বা ক্ষতি হয়, তা একনিমিষে দেখা যায় না। এর প্রভাব পড়ে দীর্ঘমেয়াদি।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, নতুন যে শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল মাধ্যমিক পর্যায়ে তা ছিল অভিজ্ঞতানির্ভর। তবে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের শিক্ষাক্রমের আদলের শিক্ষায় ফিরে গিয়ে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষার বইয়ের কোন কোন অংশ থেকে প্রচলিত লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে তা খুঁজে বের করে আমরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস প্রস্তুত করছি। আর বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নকাঠামো প্রস্তুত করছি। শিক্ষক ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে সেমিনার করে সিলেবাস ও প্রশ্নকাঠামো করা হয়েছে।

গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২, নতুন পুস্তক মুদ্রণ ও চলমান মূল্যায়ন পদ্ধতিসংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা প্রদান’ শীর্ষক পরিপত্র জারি করে। এতে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করার কথা বলা হয়। সেই সঙ্গে সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ শ্রেণিগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম বাংলাদেশের অর্থনীতির ৫টি বড় চ্যালেঞ্জ আছে জাতির সামনে শিরোনাম গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ শিরোনাম নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে শীতকালীন উপহার (সুয়েটার) প্রদান করেন শিরোনাম নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস শিরোনাম গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত শিরোনাম গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত