ঢাকা, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
Banglar Alo

ফরাজী হাসপাতালে আসা ৯শ জনই ছিল গুলিবিদ্ধ

Publish : 07:27 AM, 26 July 2024.
ফরাজী হাসপাতালে আসা ৯শ জনই ছিল গুলিবিদ্ধ

ফরাজী হাসপাতালে আসা ৯শ জনই ছিল গুলিবিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চরম সংঘাতময় পরিস্থিতি ছিল রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা এলাকায়। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটে। বিশেষ করে রামপুরা ব্রিজ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, উত্তর বাড্ডা ও নতুন বাজার এলাকার সংঘর্ষে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের সিংগভাগই ছিল শিক্ষার্থী ও পথচারী, যার অধিকাংশই ছিল গুলিবিদ্ধ। তারা স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়। সক্ষমতার চেয়ে আহতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালগুলোকে। এর মধ্যে ফরাজী হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া এক হাজার জনের মধ্যে ৯শ জনই ছিল গুলিবিদ্ধ।

সরেজমিন দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে অন্তত তিন দিন রণক্ষেত্র ছিল রামপুরা ও বাড্ডা। এ সময় এ দুই এলাকায় আহত হয় দুই হাজারের বেশি মানুষ। ঘটনাস্থলেই মারা যায় অন্তত ৩৮ জন। তবে আশপাশে সরকারি কোনো হাসপাতাল না থাকায় ভরসা ছিল বেসরকারি এএমজেড হাসপাতাল, ফরাজী হাসপাতাল, বাড্ডা জেনারেল হাসপাতাল। এ ছাড়া চিকিৎসা না দেওয়ায় ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিকে হামলা চালালে সাময়িকভাবে চালু হয় জরুরি চিকিৎসা প্রদান।

তবে আহতদের চিকিৎসায় বড় ভূমিকা পালন করে বনশ্রীর ফরাজী হাসপাতাল। সংঘর্ষে আহত এক হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নেয় এখানে। এদের মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ছাড়াও পথচারী, পুলিশ ও শিশুও ছিল। আহতের পাশাপাশি এ সময়ে ঘটনাস্থলে নিহত ১৫ জনের লাশ যায় হাসপাতালটিতে। যাদের আহত রোগীর সঙ্গে সরকারি অন্যান্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতালটি।

ফরাজী হাসপাতালের তথ্য কর্মকর্তা ও উপ-ব্যবস্থাপক মো. রুবেল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, হাসপাতাটিতে সর্বোচ্চ ৮০ জন রোগী ভর্তির সক্ষমতা রয়েছে। আছে সাত শয্যার আইসিইউ। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে শত শত মানুষ আসায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার ৩শর মতো আহত ও পাঁচটি মরদেহ আসে। পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজের পরপরই চতুর্দিক থেকে আহত মানুষ আসতে থাকে। যাদের প্রায় সবাই ছিল গুলিবিদ্ধ। এর মধ্যে ১০ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহতদের মধ্যে শিশু ও পুলিশও ছিল। শনিবার চিকিৎসা নিতে আসে ৫০ জন। সব মিলিয়ে তিন দিনে এক হাজারের বেশি আহত মানুষ এসেছে। যাদের ৯০ ভাগই ছিল গুলিবিদ্ধ। গুরুতর আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে মুগদা ও ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

আহত রোগীদের চিকিৎসায় হিমশিম খেতে হয়েছে বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালকেও। এই প্রতিষ্ঠানও এক হাজারের বেশি আহতকে চিকিৎসা দিয়েছে। সংঘর্ষে নিহত ২৩ জনের মরদেহ এ হাসপাতালে আসে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরমান বলেন, ওই সময়ে বহু মানুষ আহত অবস্থায় আসেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। অনেককে মৃত অবস্থায়ও আনা হয়। হাসপাতালটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যারা মারা গেছে তাদের তথ্য আলাদা করে রাখা হয়নি।

আহত রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছে বাড্ডা জেনারেল হাসপাতালও। কোনো মরদেহ না এলেও ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক অনিবাস মৃধা অভি।

অন্যদিকে ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টার হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল না বাড্ডার ইবনে সিনায়। কিন্তু আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ায় হাসপাতালে হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। পরে বাধ্য হয়ে জরুরি চিকিৎসা চালু করতে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। হাসপাতালটির সহকারী ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের আসলে করার কিছু ছিল না। কারণ এটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। হামলার পর সাময়িকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

চিকিৎসা নেওয়াদের তথ্য সংগ্রহ করছে প্রশাসন : এদিকে সংঘর্ষে আহত হয়ে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়াদের তালিকা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনকারীদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বাইরে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা, দুষ্কৃতকারী, সন্ত্রাসীদের পরিচয় শনাক্তে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। গতকাল বাড্ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহ করতে দেখা যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন কর্মকর্তাকে।

ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে কারা ছিল তাদের খুঁজে বের করতে ডিজিএফআই, পিবিআই ও সংশ্লিষ্ট থানা হাসপাতালগুলোতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। তথ্য নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন ফরাজী হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন বলেন, গত তিন দিনে বিভিন্ন গোয়েন্দা শাখার সদস্য চিকিৎসা নেওয়াদের তথ্য নিতে আসছে। তারা হাসপাতালের সামনে থাকা সিসিটিভি ফুটেজও নিয়ে গেছে।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা শিরোনাম দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সয়াবিন ও পাম তেলে ভ্যাট ছাড় শিরোনাম ঈদ ও পূজার ছুটি বাড়লো শিরোনাম বিড়াল তাড়াতে গিয়ে প্রাণ গেল নারীর শিরোনাম শমসের মবিন চৌধুরীর বাসায় অভিযান শিরোনাম নতুন দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় পিটার হাস