তারেক বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মিলি
খুলনার নিউ বিশ্বাস প্রপার্টিজের মালিক তারেক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্ত্রী মোছা. মাহামুদা আক্তার মিলি (৩২) হত্যার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৭ মার্চ) খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক জামিউল হায়দার হরিণটানা থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
তারেক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নিয়মিত যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, তারেকের প্রথম স্ত্রী মোসা. নাসিমা (৩৫), তারেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. বিল্লাল ও বঙ্কিম অধিকারী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মিলির মৃত্যু হলেও কয়েকদিন আগে মিলিকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ হলে তার মা সেলিনা বেগম মামলা করেন। এ ঘটনায় তারেককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আদালতে বাদীর আরজি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে মিলির সাথে তারেক বিশ্বাসের বিয়ে হয়। এর আগে তার আরেকটি বিয়ে ছিল। তাদের বিচ্ছেদ হলে মিলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ের পর জমির ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে মিলির পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করছিল তারেক। একপর্যায়ে মিলির পরিবার ২৫ লাখ টাকা দেয়। টাকা নেওয়ার পর তারেক প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক শুরু করে। শহরে বাসা ভাড়া করে করে তার সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করত তারেক।
এ নিয়ে মিলির সাথে তারেকের বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া হতো। এ সময় মিলির সংসারের সকল খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেয় তারেক। এরইমধ্যে প্রথম স্ত্রীকে সে বাড়িতে নিয়ে আসে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এদিকে প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে কথা বলায় মিলিকে প্রায়ই মারধর করত তারেক। সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তারেক ফের যৌতুকের দাবিতে মারধর করে মিলিকে। নির্যাতনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিলিকে খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মিলির মা খবর পেয়ে মেয়েকে দেখতে যান হাসপাতালে। সে সময় মিলি তার মাকে জানান, তারেক তার প্রথম স্ত্রী ও কর্মচারীদের নিয়ে মিলিকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার পরামর্শ করেছে।
ওইদিন রাত ১১টার দিকে মিলি হাসপাতালে মারা যান। এরপর তড়িঘড়ি করে অভিযুক্ত তারেক ময়নাতদন্ত করতে না দিয়ে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়। এমনকি মিলির মা মেয়ের লাশ বুঝে নিতে চাইলেও তাকে লাশ বুঝিয়ে দেয়নি তারেক। মরদেহ গোসল করানোর সময় মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
সম্প্রতি মিলির মৃত্যুর একমাস পর মিলিকে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মিলি পরিবারের সদস্যদের বলছে আমাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। অপরদিকে তারেক তার মিলিকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে।
আদালত মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়ার পর হরিণটানা থানা পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। একইসাথে মামলার প্রধান আসামি তারেক বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হরিণটানা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাতেই মামলা গ্রহণ করেছি। একইসাথে ১নং আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com