নিজস্ব প্রতিবেদক :

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, ‘জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার আমরা অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সব অপারেশনই করব। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা পুলিশ জনগণের পাশে আছি এবং শান্তিপ্রিয় জনগণও আমাদের পাশে আছেন। তারা কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদের রাঙ্গা চোখ এটিকে কখনো বরদাস্ত করবে না, তাদেরকে দমন করবে।’ আজ রবিবার দুপুরে গাজীপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে, গাজীপুরকে কেন্দ্র করে পতিত সরকার তারা ঘোষণা দিয়েছে, যারা আমাদের ঘুমাতে দেয় না, আমরা গাজীপুরবাসীকে ঘুমাতে দিব না, জনগণকে ঘুমাতে দিব না। তারা যখন ঘোষণা দেয়, তারা জনগণকে ঘুমাতে দিবে না, জনগণকে প্রতিপক্ষ ভেবে জনগণকে শান্তি দিবে না, একথাবলে। তখন পুলিশের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার হয়ে যায়। পুলিশ অবশ্যই তখন একটু এগ্রিসিভ ভাবে না করলে জনগণকে শান্তি ঘুমাতে দিবে না। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব জনগণকে শান্তি দেওয়া, তার জন্য পুলিশকে আরেকটু ভাল করে পুলিশিং না করলে জনগণের পাশে না দাঁড়ালে একটি আমাদের দায়িত্বের অবহেলা হয়ে যায়। এটিকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কনসার্ন হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিদের্শনা এসেছে। অপারেশন ডেবিল হান্ট নামে একটি অপারেশন চালু করেছে। সেই অপারেশনের অংশ হিসেবে আমরা যৌথ বাহিনী অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি, গাজীপুরে তারা প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ঢুকিয়েছে। গাজীপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। আপনারা দেখেছেন, গত সন্ধ্যায় আমরা পুলিশ ছিলাম, কিছুক্ষণ আগে পুলিশ আমরা ওখান থেকে এসেছি, আমি নিজেও ওখান থেকে এসেছি, কথা বলে এসেছি। ছাত্র-জনতা ছিল, কিছু দুরেই আর্মি ছিল, বিজিবি ছিল। তার মধ্যেই তারা একটি গুলি করে একজনকে আহত করেছে। তারা অশান্ত করার জন্য সকল কিছু করছে। আমরা মনে করি তাদেরকে যেকোন ভাবে এই দুর্বৃত্তকারীদেরকে যেকোন ভাবে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এই নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমাদের এই দুর্বৃত্তকারীদেরকে অবশ্যই গ্রেপ্তারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার আমরা অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সব অপারেশনই করবো। যারা জনগণকে অশান্ত করতে চায়, জনগণকে অস্বস্তিতে রাখতে চায়, জনগণকে ঘুমাতে দিতে চায় না। তাদেরকে সমুচীন জবাব আমরা দিতে চাই। আপনাদের মাধ্যমে আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই আমরা জনগণের পাশে আছি। এবং শান্তিপ্রিয় জনগণও আমাদের পাশে আছে। তারা কোন ভাবেই ফ্যাসিবাদের রাঙ্গা চোখ এটিকে কখনো বরদাস্ত করবে না, তাদেরকে দমন করবে ইনশাআল্লাহ্।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কখনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করিনা। আমরা যুদ্ধ ঘোষনা করি দূর্বৃত্তের বিরুদ্ধে। আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। তারা যখন মৃত্যুর হুমকি দেয় জনগণকে না ঘুমানোর হুমকি দেয়, আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে চাই। আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে চাই না। যারা জনগণকে অশান্ত করতে চায়, দেশের পরিস্থিতিকে অশান্ত করতে চায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে চাই।’

তিনি জানান, এ ঘটনায় যারা সরাসরি জড়িত তাদের মধ্যে থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। আমরা আশা করছি প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনব এবং যারাই জনগণকে অশান্ত করবে, যারা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, যারা জনগণকে ঘুমাতে দিবে না বলে ঘোষণা দিবে, তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

 বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশ্যে করে গুলি ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি তো পরিষ্কার, যারা জনগণকে হুমকি দেয় আমরা জীবন দিব। তারা জীবন দিতে পারলে আমরা কেন জীবন দিব না। যারা হুমকি দেয় আমরা জনগণকে ঘুমাতে দিবো না। যারা হুমকি দেয় আমরা দেশকে শান্ত থাকতে দিবো না। এ থেকেই বুঝা যায় কারা এটি করছে। আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করছি।’