ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
Banglar Alo

এবার কি ফাঁসছেন বনজ কুমার মজুমদার!

Publish : 01:14 AM, 01 December 2024.
এবার কি ফাঁসছেন বনজ কুমার মজুমদার!

এবার কি ফাঁসছেন বনজ কুমার মজুমদার!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তৎকালীন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছিলেন আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।

কিন্তু তার মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন আদালত। স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তিনবছর সাত মাস ধরে কারাবন্দি থাকা পুলিশের সাবেক এই কর্মকতা গত বুধবার হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন।

সাবেক পিবিআই প্রধান বনজ কুমারের পরিকল্পিত চক্রান্তের কারণেই বাবুল বাদী থেকে আসামি হয়েছেন বলে অভিযোগ তার পক্ষের আইনজীবীদের। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি এবার ফেঁসে যেতে পারেন বনজ কুমার মজুমদার।

জামিন আদেশের পর গত বুধবার তার আইনজীবী শিশির মনির আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১ জুলাই থেকে বিচারিক আদালতে মিতু হত্যা মামলার সাক্ষীরা আদালতে আসেননি।

তারা আদালতে গিয়ে বলেছেন—বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তৎকালীন প্রধান বনজ কুমার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তারা। এখন তারা সাক্ষ্য প্রত্যাহার করতে চান। তাছাড়া বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে যেহেতু সরাসরি কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই, তাই সব কিছু বিবেচনা করে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছেন।’

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় মাহমুদাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন ৬ জুন বাবুল বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একইদিন (১২ মে) বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন।

সেইসঙ্গে অভিযোগ করা হয়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে বাবুল তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে ছিলেন বাবুল। বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। এ মামলায় মোট ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এদিকে চাঞ্চল্যকর এই মামলা নিয়ে রীতিমতো ‘বোমা’ ফাটান প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইন। মিতু হত্যার ঘটনা নিয়ে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছেন তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ভিডিও কনটেন্ট প্রকাশ করেন তিনি।

ইলিয়াস হোসাইন ভিডিওতে দাবি করেন, ‘২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেটে স্বর্ণের গুদামে অভিযান চালান বাবুল আক্তার। সেই অভিযানের খবর শুনে বনজ কুমার মজুমদার ফোন করেন বাবুল আক্তারকে। বাবুল অভিযান বন্ধ করতে রাজি না হলে প্রথমে ৫০ লাখ থেকে শুরু করে সর্বশেষ দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষের প্রস্তাব দেন বনজ।’

তবে এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে বনজ কুমারের ব্যাখ্যা ছিল, ‘ওই অভিযানটি একটি গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হয়। সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ডিবি ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে বাবুল আক্তারের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান ছিল না। তিনি ওই মামলার বাদী, সাক্ষী কিংবা তদারককারী অফিসারও ছিলেন না।’

২০২০ সালের মে মাসে মাহমুদা হত্যার তদন্ত ভিন্ন মোড় নেয়। বাবুলের দুই ব্যবসায়িক সহযোগী সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেন, ‘তিন লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে বাবুল তার স্ত্রীকে খুন করান। এরপর স্ত্রী খুনের মামলায় বাদী বাবুলই হয়ে যান আসামি। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুলকে প্রধান আসামি ও পরিকল্পনাকারী উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বাবুলসহ আসামি করা হয় ছয়জনকে। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে তিন বছর পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলা তদন্তে দায়িত্ব পায় পিবিআই।

২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল মুসা আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেন, বাবুলের নির্দেশে তিনি (মুসা) এই খুন করেন। এর আগে ২০১৬ সালে আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার জবানবন্দিতে মুসার নির্দেশে মিতুকে খুন করার কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু তখন তদন্ত আটকে যায় ‘মুসায়’।

কারণ, মুসা কার নির্দেশে এই খুন করেছেন, তা তখন জানা যায়নি। মুসার স্ত্রীর পান্না আক্তারের দাবি, তার স্বামীকে পুলিশই ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু পিবিআই তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।  

এদিকে মিতু খুনে বাবুল জড়িত বলে অভিযোগ উঠার পর তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘বাবুল একজন চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা। অনেক সূত্রবিহীন মামলাও খুঁজে বের করে ফেলেছে। সেই বাবুল যদি তার স্ত্রীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কি সরাসরি জড়িত হবে? নিজের সোর্সকে দিয়ে খুনটি করাবে? তাও বাড়ির কাছে, ছেলের সামনে? বিষয়গুলো ভেবে দেখা উচিত।’

বাবুল আক্তারের আইনজীবীদের ভাষ্য, বাবুল এবং তার কথিত বান্ধবী গায়েত্রীকে নিয়ে একের পর এক ‘গুজব নিউজ’ প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এরপর ২০২০ সাল থেকে ‘২৭ সেকেন্ডের কল রেকর্ড’ এ মামলার গতি পাল্টে যায় বলে পিবিআই সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ভুয়া সংবাদও প্রকাশ করে। ২০২০ সালের ৫ জুন ‘তোরে কোপাতে কইছি, কোপাইল ক্যান’ শিরোনামে প্রতিবেদনে সংবাদ প্রচার হয়। কিন্তু মুসার সেই কল রেকর্ডটি কোথায়?

এছাড়া যে নারীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে মিতুকে বাবুল খুন করিয়েছে বলে পিবিআই দাবি করেছে সেই নারীকে কেন আদালতে হাজির করা হয়নি। কেন ওই নারীর মোবাইল ফোনটি জব্দ করেনি পিবিআই। অথচ ২৭ সেকেন্ডের সেই কথিত ‘কথোপকথন’ এর  রেকর্ডটিই এখন মিতু হত্যার প্রধান আলামত ও সাক্ষী।’

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, কোনো সমস্যা নেই শিরোনাম অপপ্রচার রোধে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শিরোনাম ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি, তাদের ষড়যন্ত্রও মোকাবিলা করবো শিরোনাম বাংলাদেশকে দুর্বল নতজানু শক্তিহীন ভাবার অবকাশ নেই শিরোনাম ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সব দল মিলে সমাবেশ প্রস্তাবনা শিরোনাম দু-একদিনের মধ্যে সুখবর পাবেন