যেভাবে দেখবেন অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা?
পাহাড় নাকি সমুদ্র? কোনটা বেশি পছন্দের এই বিতর্ক ভ্রমণপিপাসুদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। কারণ ভ্রমণপিপাসুরা একটু অবসর সময় পেলেই সাগর কিংবা পাহাড়ে ছুটে যান। প্রকৃতিতে শীতকালের আগমনে সেই ইচ্ছা আরও প্রবল হয়। কারণ ক্যালেন্ডারে নভেম্বর ও ডিসেম্বর এই দুই মাসে কিছুটা ছুুটি মিলে কর্মজীবীদের। অনেকে আবার ডিসেম্বর মাসকে ঘিরেই ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন। সেই পরিকল্পনার তালিকায় ব্যক্তিভেদে দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান জায়গা করে নেয়।
তেমনি একটি জায়গা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার কাঞ্চনজঙ্ঘা। শীতকাল আসলেই যার রূপে মুগ্ধ হন ভ্রমণপিপাসুরা। তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে তেঁতুলিয়ায় ভিড় জমে দর্শনার্থীদের। এই দুই মাসে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা সূর্য ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্নরূপে দর্শনার্থীদের সামনে হাজির হয়। যে রূপ দেখে বিমোহিত হোন প্রকৃতিপ্রেমীরা। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে কিছুটা ভাগ্যেরও বিষয় থাকে। অনেক সময় আবহাওয়া খারাপ থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ না দেকেই ফিরতে হয় দর্শনার্থীদের।
ভারতের সিকিম ও নেপালের হিমালয় পর্বতমালার তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার অবস্থান। এই দুই দেশে অবস্থান হলেও কুয়াশাডাকা হেমন্তের ভোরে বাংলাদেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই পর্বতমালার দেখা মেলে। বরফে ঢাকা শৃঙ্গ ভোরের আলোয় জেগে উঠে সোনালি রং ধারণ করে। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে দিনের অন্য সময়েও দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকায় বসে প্রকৃতিপ্রেমীদের আড্ডা। এই সৌন্দর্য দেখতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন তেঁতুলিয়া থেকে।
কোথা থেকে দেখবেন কাঞ্চনজঙ্ঘা : কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখার জন্য আপনাকে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোর মহানন্দার পাড়ে যেতে হবে। যেখান থেকে স্টস্পভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখা যায়। এছাড়াও পঞ্চগড় জেলা শহরসংলগ্ন করতোয়া সেতুতে দাঁড়ালে কিংবা শহরের কোনো উঁচু দালানে দাঁড়িয়েও উত্তরের মেঘমুক্ত আকাশে দেখা পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ায় যাওয়ার পথে সড়ক থেকেও কখনো সামনে, কখনো ডানে আবার কখনো বাঁয়ে দেখা মিলবে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য।
কীভাবে যাবেন : দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথে এসি ও নন–এসি বাসে পঞ্চগড়ে যাওয়া যায়। অধিকাংশ বাসের শেষ গন্তব্য থাকে তেঁতুলিয়া। রেলপথেও যাওয়া যায় পঞ্চগড়ে। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেস ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে চলাচল করে। পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে চলে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পর্যন্ত আকাশপথেও আসা যায়। সেখান থেকে পঞ্চগড়ে আসতে হবে সড়কপথে। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। বাস কিংবা অন্য বাহনে পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরে যাওয়া যায় খুব সহজেই।
খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা : পঞ্চগড় জেলা শহরে রয়েছে সার্কিট হাউসসহ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের গেস্টহাউস। বেসরকারিভাবে সেন্ট্রাল গেস্টহাউস, হোটেল মৌচাক, হোটেল প্রিতম, অগ্রদূত প্যালেস, এইচ কে প্যালেস, ধানসিঁড়িসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে পঞ্চগড়ে।
তেঁতুলিয়ায় রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি হোটেল ও বাংলো। মহানন্দা নদী ঘেঁষে উঁচু টিলার ওপর অবস্থিত শতবর্ষ পুরোনো তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো। ব্রিটিশ আমলের এই ডাকবাংলো বর্তমানে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো হিসেবে পরিচিত। আগেভাগে যোগাযোগ করে এই ডাকবাংলোয় থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। পুলিশের অফিসার্স মেস, উপজেলা পরিষদের বেরং কমপ্লেক্স, সড়ক ও জনপদের গেস্টহাউস, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের গেস্টহাউস, বন বিভাগের গেস্টহাউস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের গেস্টহাউসে থাকার ব্যবস্থা আছে।
এ ছাড়া তেঁতুলিয়ায় বেসরকারিভাবে হোটেল দোয়েল, স্কয়ার হোটেল, স্বপ্ন গেস্টহাউস, কাঠের বাড়ি গেস্টহাউস, হোটেল সীমান্তের পাড়, হোটেল কাঞ্চনজঙ্ঘা, কাজী ব্রাদার্স এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও পরিচালিত মহানন্দা কটেজসহ রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com