দুর্গোৎসব শেষ, মর্ত্যলোক ছেড়ে গেলেন দেবী
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনের দুর্গাপূজা। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঢাকের বাদ্য, মন্ত্রপাঠ, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, সিঁদুর খেলা, খোল-করতাল ও গান বাজিয়ে চোখের জলে জগজ্জননী মা দেবী দুর্গাকে গতকাল রোববার বিদায় দেন দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। সেই সঙ্গে আসছে বছর আবারও মা মর্ত্যলোকে ফিরে আসবেন– এই আকুল প্রার্থনা জানান তারা।
রাজধানীর একপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীতে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে এদিন জড়ো হন বিপুলসংখ্যক ভক্ত। মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা বছিলা দিয়ে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। ঢাকার বাইরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে গতকাল কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে সাগরে বিসর্জন দেওয়া হয় ৩৪০টি প্রতিমা। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতেও বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নামে। পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলে প্রতিমা বিসর্জন। প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনেক ভক্ত ছিলেন অশ্রুসিক্ত। আবার অনেকে ক্ষণটি সুন্দর করে কাটাতে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন।
বিজয়া দশমীতে পূজা উদযাপনের প্রধান আচারের অংশ হিসেবে নারীরা সিঁদুর খেলায় অংশ নেন। শহরের মণ্ডপ ও মন্দিরে প্রথমে দুর্গার পায়ে সিঁদুর নিবেদন করেন নারীরা। পরে একে অপরের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনের সমৃদ্ধি কামনা করেন।
সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছিলেন (আগমন)। যার ফল ছিল মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। আর দেবী স্বর্গলোকে (গমন) গিয়েছেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হিসেবে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণা হয়ে উঠবে।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে গতকাল ছিল সরকারি ছুটি। দিনটি উপলক্ষে সকালে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিসরে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এবার ঢাকা মহানগরীর ২৫২টিসহ সারাদেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব হয়। এ উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনসহ বিভিন্ন মণ্ডপে বসে মেলা। পূজা শেষ হলেও কোথাও কোথাও মেলা চলবে আরও দু-তিন দিন।
পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিনের মূল আকর্ষণ ছিল বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন। গতকাল বিকেল ৪টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনের কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণ থেকে একযোগে শুরু হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে পূজারিরা ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হন মন্দির মেলাঙ্গনে। সেখানে ভক্তদের নাচ-গানে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। তারা রং ছিটিয়ে, ঢাকঢোলসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের পাশাপাশি উলুধ্বনিতে উৎসবমুখর করে তোলেন পরিবেশ। বিজয়া দশমী ঘিরে রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com