ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৫
Banglar Alo

হামাসের নতুন নেতা হচ্ছেন খালেদ মেশাল?

Publish : 12:07 PM, 02 August 2024.
হামাসের নতুন নেতা হচ্ছেন খালেদ মেশাল?

ছবিঃ সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক :

ইসরায়েলি গুপ্তহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া খালেদ মেশাল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসে রাজনৈতিক নেতা পারেন। বুধবার নিহত ইসমাইল হানিয়েহ-এর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

১৯৯৭ সালে ইসরায়েলি এজেন্টরা জর্ডানের আম্মানে মেশালকে বিষপ্রয়োগ করে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এই হামলার পর জর্ডানের তৎকালীন রাজা বিষের প্রতিষেধক সরবরাহ করা হলে হত্যার চেষ্টাকারীদের দণ্ড ও ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন।

ইসরায়েল জর্ডানি রাজার দাবি মেনে নেয়। একই সঙ্গে তারা হামাস নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে মুক্তি দেয়। যদিও সাত বছর পর গাজায় তাকে হত্যা করা হয়। 

ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে হামাস একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের দাবি, ইসরায়েলের ধ্বংসের জন্য লড়াই করছে। কিন্তু ফিলিস্তিনি সমর্থকদের কাছে, মেশাল ও হামাসের নেতৃত্ব ইসরায়েলি দখল থেকে মুক্তির সংগ্রামের নেতা।

হামাস সূত্রের মতে, মেশালকে ইসমাইল হানিয়েহর স্থলাভিষিক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

১৯৯০ দশকের শেষের দিক থেকে হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন মেশাল। কিন্তু তিনি অনেকটাই নিরাপদে নির্বাসনে থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কারণ গাজায় হামাসের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গুপ্তহত্যা করে চলেছে ইসরায়েল।

২০০৪ সালের মার্চে বিমান হামলায় হুইল চেয়ার নিয়ে চলাফেরা করা ইয়াসিন নিহতের পর এক মাসের মধ্যে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া আবদেল-আজিজ আল-রান্তিসিকেও হত্যা করা হয়।

হামাসের অন্যান্য নেতাদের মতো মেশাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে আরও বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হবে কিনা সেই জটিলতায় পড়েছেন। হামাসের ১৯৮৮ সালের সনদে ইসরায়েলকে ধ্বংসের আহ্বান জানানো হয়েছে।  

মেশাল ইসরায়েলের সঙ্গে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তির ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে ইসরায়েলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হামাস একটি অস্থায়ী সমাধান হিসাবে পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করতে পারে। যা হবে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতির অংশ।

৭ অক্টোবর হামাসের দ্বারা পরিচালিত আক্রমণে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫০ জনকে গাজায় জিম্মি করা হয়। এর পরপরই, ইসরায়েল গাজায় একটি ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। যে অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজারের বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। গাজার অধিকাংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এই বিষয়ে মেশাল বলেছিলেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের দাবিকে বিশ্ব এজেন্ডার কেন্দ্রে ফিরিয়ে এনেছে।

তিনি আরব ও মুসলমানদেরকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগদানের আহ্বান জানান। হামাস নেতা বলেছিলেন, যুদ্ধ শেষে গাজা শাসন করা থেকে হামাসকে বাদ দিতে চায় এমন ইসরায়েলি ও মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনের বাসিন্দারাই সিদ্ধান্ত নেবে কে গাজা পরিচালনা করবে।

মেশাল এখন দোহা ও কায়রোতে বাস করছেন। তার জীবনের বেশিরভাগ কেটেছে ফিলিস্তিনের বাইরে। পশ্চিম তীরের রামাল্লার কাছে সিলওয়াদে তার জন্ম। ছোটকালেই পরিবারের সঙ্গে কুয়েত পাড়ি জমান তিনি।

১৫ বছর বয়সে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগ দেন। এটি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে পুরনো ইসলামি গোষ্ঠী। ১৯৮০-এর দশকে হামাস প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই গোষ্ঠীটি। 

বিদেশে হামাসের হয়ে কাজ শুরুর পূর্বে মেশাল স্কুল শিক্ষক ছিলেন। জর্ডানে তিনি আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। 

গুপ্তহত্যার চেষ্টার পরে জর্ডান হামাসের কার্যালয় বন্ধ করে দেয় এবং মেশালকে কাতার যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০০১ সালে তিনি সিরিয়া পাড়ি জমান।

২০০৪ সাল থেকে দামেস্কতে নির্বাসিত অবস্থায় থেকে হামাস পরিচালনা শুরু করেন মেশাল। ২০১২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করেন। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে দমনপীড়ন শুরু হলে তিনি দামেস্ক ত্যাগ করেন। এ সময় ইরানের সঙ্গে মেশালের সম্পর্ক অতীতে উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে ২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে সুন্নি মুসলমান নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহের সমর্থনের কারণে।

সিরিয়া থেকে তার চলে যাওয়া শুরুতে হামাসের মধ্যে তার অবস্থান দুর্বল করে দেয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মেশাল প্রথমবার গাজা সফর করেন। ওই সময় হামাসের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান ভাষণ দেন। ১১ বছর বয়সে পশ্চিম তীর ছাড়ার পর আর কখনও সেখানে যাননি তিনি।

তিনি বিদেশে থাকাকালীন হামাস ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী ও পশ্চিমা-সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়ায় এবং গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সমঝোতা প্রচারের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে মেশাল এবং গাজাভিত্তিক হামাস নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

মেশাল তখন ঘোষণা করেন, তিনি এমন উত্তেজনার কারণে নেতার পদ থেকে সরে যেতে চান। ২০১৭ সালে গাজা ডেপুটি হানিয়াহকে নেতা নির্বাচিত করা হয়। ২০২১ সালে মেশাল ফিলিস্তিনি প্রবাসী হামাস কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তারেক রহমানের শিরোনাম বিয়ে করলেন সমন্বয়ক রাফি শিরোনাম রোমাঞ্চকর অনুভূতি হামজার, খেলতে চান ৮ নম্বর জার্সি পরে শিরোনাম বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন শিরোনাম জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা: ঢাবির ১২৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার শিরোনাম ‘ওই কিরে’, আদনানেন পোস্টে মেহজাবীনের মধুর জবাব