ঢাকা, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
Banglar Alo

কোটাবিরোধী আন্দোলন: দেশজুড়ে আজ দিনভর ব্লকেড

Publish : 12:21 PM, 10 July 2024.
 কোটাবিরোধী আন্দোলন: দেশজুড়ে আজ দিনভর ব্লকেড

কোটাবিরোধী আন্দোলন: দেশজুড়ে আজ দিনভর ব্লকেড

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ আরও বড় হলো। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথে আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বাত্মক বাংলা ব্লকেড বা অবরোধ করবেন তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেলপথ এর আওতাভুক্ত থাকবে। দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের নিকটবর্তী সড়ক অবরোধের আহ্বান জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অনেকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বলছেন। আমরাও চাই না সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি হোক। কিন্তু এখনো নির্বাহী বিভাগের সাথে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি বা আশ্বাস পাইনি। সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে কোটা বৈষম্য নিরসন করতে হবে। আমাদের এখন আদালতের কাছে কোনো দাবি নেই, আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকার কোটা সংস্কারের বিষয়টি বিলম্বিত করতে আদালতের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা, নারী, জেলা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধী কোটা ন্যূনতম পর্যায়ে রেখে সংসদে আইন পাস করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা হোক। সরকারকে এই দাবি মানতে বাধ্য করতে আগামী কয়েক দিন সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।

এদিকে, কোটা সংস্কার ও হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন দুই শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান। তাঁদের আবেদনের বিষয়ে আজ বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। 

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটার পর চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এই দিন ঠিক করে দেন।

আবেদনকারীদের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবেদনকারীরা সাধারণ শিক্ষার্থী। তাঁরা আন্দোলনকারী নন। আবেদনে হাইকোর্টের রায় স্থগিত ও কোটা সংস্কার চাওয়া হয়েছে, বাতিল নয়। এর আগে সকালে আবেদন করার জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। চেম্বার বিচারপতি অনুমতি দিলে তাঁরা আবেদন জমা দেন। 

এদিকে গতকাল অবরোধ কর্মসূচি না থাকায় সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনলাইনে আলোচনা করেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আজকের সর্বাত্মক অবরোধের সমর্থনে প্রচার চালান।

এদিকে আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা জানিয়ে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনের বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কারবিষয়ক যেসব আন্দোলন হচ্ছে, তা অত্যন্ত যৌক্তিক। তাঁরা মেধার মূল্যায়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে অতি দ্রুত রায় দিতে আদালতের প্রতি অনুরোধ জানান। 

রাজধানীতে গতকাল অবরোধ না থাকলেও বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের নথুল্লাবাদ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষাথীরা। এ সময় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তাঁরা।

দুপুর ১২টার দিকে কলেজ গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা। শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন হবিগঞ্জের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবিতে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এই কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়। সেই আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৪ অক্টোবর সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর ফলে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল হয়ে যায়।

তবে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। ফলে কোটা বহাল হয়ে যায়।

এতে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিলের দাবিতে আবার রাস্তায় নামেন তাঁরা। ঈদুল আজহার আগে কয়েক দিন বিক্ষোভের পর দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ১ জুলাই থেকে জোর আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম উপদেষ্টা, সমন্বয়কের প্রতিক্রিয়া শিরোনাম যাত্রাবাড়ীতে ‘জেগে’ আছেন শহীদরা শিরোনাম নির্বাচনের দিন ঠিক করে কাজ-কর্ম শুরু করুন: নীরব শিরোনাম গাজায় স্কুলে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ১০ শিরোনাম ব্যারিস্টার সুমন এতদিন কোথায় ছিলেন? শিরোনাম ব্যারিস্টার সুমন গ্রেপ্তার