ঢাকা, ১৫ মে, ২০২৪
Banglar Alo

পিডিবির বকেয়া ৪২ হাজার কোটি টাকা

Publish : 12:16 AM, 30 April 2024.
পিডিবির বকেয়া ৪২ হাজার কোটি টাকা

পিডিবির বকেয়া ৪২ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিপুল অঙ্কের বকেয়া পড়েছে বিদ্যুৎ খাতে। বর্তমানে এর পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ বকেয়া দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে ব্যাহত হতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ। আপাতত কিছু বন্ড ছেড়ে এ বকেয়া সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও চলমান ডলার সংকট এবং প্রয়োজনীয় ভর্তুকি ছাড়ে শ্লথগতির কারণে বকেয়া শোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে পিডিবিকে। ভর্তুকি ছাড়ে বারবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে তাগাদা দিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

জ্বালানি খাতে সরকারের বকেয়া প্রায় ৪১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির পাওনা ৩৭ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। গ্যাস বিক্রির টাকা বাবদ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে পেট্রোবাংলা পাবে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মালিকরা পিডিবির কাছে পাবে ১৫ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পাবে ৬ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। 

আদানি গ্রুপ পাবে ৪ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া ৯ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারত পাবে ১ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া আছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। হালনাগাদ এ বকেয়ার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। অন্য একটি সূত্রের দাবি, বকেয়ার পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

সরকার যে টাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তার চেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করে। বাকি টাকা ভর্তুকি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। গত অর্থবছর থেকে অর্থ বিভাগ বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির টাকা যথাসময়ে দিতে পারছে না। চাহিদার তুলনায় অর্থ মন্ত্রণালয় ভর্তুকি দিচ্ছে অনেক কম। ফলে বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে। গত জুন শেষে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বকেয়া জমে যায় ৩৬ হাজার ৩৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বন্ডে পরিশোধ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ বন্ডে পরিশোধের পরও গত অর্থবছরের বকেয়া ভর্তুকি ছিল ২৫ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছর বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করেছে ১৭ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধের জন্য ভর্তুকির ১৭ হাজার ৭০১ কোটি টাকা ছাড় করতে অর্থ বিভাগকে অনুরোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে বর্তমান সংকট উৎপাদন সক্ষমতা নয়, উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি সংগ্রহ করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিডিবি বর্তমান আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। অল্প সময়ে বিপুল বকেয়া পরিশোধে ডলার ও অর্থের জোগান দেওয়া কঠিন হলেও তা নানাভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা এবং বিদ্যুৎ খাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সক্ষমতা ও বিপুল কেন্দ্র ভাড়া দেশের অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্র ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) দিতে গিয়ে বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে কেন্দ্র ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এখন এ বকেয়া পরিশোধ করতে না পারলে এক পর্যায়ে গিয়ে উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। লোডশেডিং বাড়বে। কারণ বেশিরভাগ আইপিপির দীর্ঘ সময় ধরে বকেয়া রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। সার্বিকভাবে বিদ্যুৎ খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, বকেয়া সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে এক পর্যায়ে গিয়ে এর প্রভাব খুবই সিরিয়াস হবে। সরকার নিশ্চয়ই এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা চাইবে না উৎপাদন ব্যাহত হোক। এটি মোকাবিলায় আপাতত লোডশেডিং বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, পুরো বছরটাই এভাবে কাটাতে হবে। যেহেতু টাকাটা লাগবেই, টাকা ছাড়া জ্বালানি আমদানি করতে পারবে না। টাকা থাকলেও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এটি উভয় সংকটের মতো। এদিকে আমরা সমস্যায় আছি। তিনি বলেন, এখন আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে ডলার। আমাদের যে ডলার আছে তা হিসাব করে খরচ করতে হচ্ছে, না হলে রিজার্ভের ওপর চাপ পড়ছে। রিজার্ভ কমবে, না হলে এক্সচেঞ্জ রেট কমে যাবে। যেভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে তাতে এ সংকটের মধ্যেই চলতে হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতে টাকারও সংকট রয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রতি বছর চারবার বাড়িয়ে তিন বছরের মাথায় এটি সমন্বয় হবে। এতে বিদ্যুতের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়ানো হবে। যতদিন না এটি সমন্বয় হচ্ছে ততদিন ভর্তুকি আমাদের কষ্ট দেবে। বাড়ানোর পর গ্রাহক এটি কীভাবে নেবে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ হোসাইন সময়ের আলোকে বলেন, বিদ্যুৎ কেনা এবং বকেয়া দেওয়া এটি একটা চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে সবাই জানে সার্বিকভাবে দেশে একটি আর্থিক টানাপড়েন চলছে, পিডিবি এর বাইরে না। পিডিবি ক্রয়মূল্যের চাইতে কমে বিদ্যুৎ বিক্রি করে। সেটি সরকারের কাছ থেকে সাবসিডি আকারে পেত। সাবসিডি পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ফলে পিডিবির বকেয়া ৩৫-৪০ হাজার কোটি টাকার মতো। এটি আমরা আস্তে আস্তে পরিশোধ করছি। তিনি বলেন, ক্রয় এবং বিক্রয় মূল্যের মধ্যে গ্যাপ না থাকলে এ সমস্যা হতো না। এখন আমরা ট্যারিফ সমন্বয় করছি, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যেন গ্রাহকের জন্য পীড়াদায়ক না হয় এবং সরকারের কাছ থেকে সাবসিডি পাওয়ার চেষ্টা করছি।
Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম নো হেলমেট, নো ফুয়েল কার্যকরের নির্দেশ শিরোনাম টটেনহ্যামকে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে ম্যানসিটি শিরোনাম বাংলাদেশি ফুচকায় মজলেন ডোনাল্ড লু শিরোনাম নতুন করে প্রেমে পড়েছেন সুশান্তের প্রেমিকা শিরোনাম আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল পাকিস্তান শিরোনাম ভারতকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের