ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৪
Banglar Alo

‘দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ংকর অবস্থা’

Publish : 12:33 AM, 29 April 2024.
‘দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ংকর অবস্থা’

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ংকর অবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ শনিবার দুপুরে গ্রন্থ প্রকাশনার এক অনুষ্ঠানে দেশের বর্তমান অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে তিনি এরকম মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে অর্থনীতিবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অধ্যাপক ডক্টর মাহবুব উল্লাহ‘র লেখা আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’র প্রকাশনা উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ৫৯২ পৃষ্ঠার গ্রস্থটির প্রকাশ করেছে ‘বাঙ্গালা গবেষণা’।

এই অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে বসে আলোচনা শোনেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, নাজমুল হক নান্নু, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহির উদ্দিন স্বপন, আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীসহ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে লেখক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর ছোট ভাই প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীর এই দিনটি উপলক্ষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপক আখতার হোসেন খান। 

অনুষ্ঠানে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুধু অর্থনীতির বিষয়ে কথা বললে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে রাজনীতির বিষয়টা সবচেয়ে বড়। রাজনীতি ঠিক না হলো অর্থনীতি ঠিক হবে না - এটা তো আপনারা দেখতেই পারছেন ভয়ংকর অবস্থা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যদি সঠিক না হয় অর্থনীতি ঠিক হবে না, রাজনীতিটা মেইন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনীতির এই টেকনিক্যাল কথা-বার্তা গ্রোথ রেইট ৫ পয়েন্ট ৫ হলো না ৫ পয়েন্ট ৭ হলো, তারপরে ইনফুয়েশন ৮ দশমিক ২ হলো না ৮ দশমিক ৩ হলো এগুলো ভেতরে কচকচালি করলে তো সমস্যার সমাধান হবে না। মূল সমস্যা হলো যে, আমাদের ইন্সটিটিউশনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজনীতিটাও অনেকটা ধ্বংসের পথে এবং সেখানে অর্থনীতি কিভাবে ঠিক থাকবে?’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে রাজনীতিতে ছাত্র জীবন পজেটিভ রাজনীতি, ভালো রাজনীতি, মানুষের কল্যাণে রাজনীতি যদি না করেন তবে কিন্তু ভবিষ্যতে ভালো মানুষও হবেন নাৃভ্যালুজ কিছু থাকতে হয়। আমাদের সময়ে কিছু ভ্যালুজ ছিল মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের তো ছিলোই সৎভাবে জীবন-যাপন করেছেন, অনেক কিছু হতে পারতেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও করেছি, আমার বন্ধু আলমগীরও (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) সৎভাবে জীবন-যাপন করেছেন একেবারে করেছেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে ভ্যালুজগুলো বারে বারে তাড়া করতো এখনো আমাদের এটা তাড়িত করে মানুষের জন্য চিন্তা, সাধারণ মানুষের জন্য চিন্তা এসব চিন্তার জন্য এখনো আমাদের তাড়িত করে।’

ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘অপরদিকে ওই সময়ে আমাদের অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিলো যারা আমাদের মার দিয়েছি আমাকেও একবার উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এনএসএফ নিয়ে গেছে তাদের সাথে সহযোগী যারা তারা এখন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, তারা এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন নাম বলব না আপনারা অনেকেই জানেন। তারা এখন আমাদের সঙ্গে তর্ক করে তোমরা কি করেছো?’

তিনি আরও বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখ লাগে বন্ধু মানুষ তো। অনেক সময় এবোর্ট করতে পারি না। কিন্তু ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেছে কি না জানি মনে হয় না ক্ষমা করেছে। মানুষ নিশ্চয় তাদের ক্ষমা করে নাই।’

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘দেশ আজকে একটা কঠিন সংকটে পড়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণ কিভাবে হবে সেটা নিসন্দেহে ৮/১০টা দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দেখে আমরা নিরুপণ করতে পারব না। আমাদেরই আমাদের পথ চয়ন করতে হবে, নিরুপণ করতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে এবং এজন্য প্রয়োজন ঘটনাটা বলি ১৯০৫ সালে রাশিয়াতে যে পাঠ্য বিপ্লব হয় সেই পাঠ্য বিপ্লবের পরে লেলিন বলেছিলেন, এখন প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়াশীলদের মধ্যে ঢুকেও আমাদের কাজ করতে হবে। ওই সময়ের জন্য ওটা ছিলো একটা মোক্ষম একটা কৌশল যে কারণে ১০১৭ সাল (রুশ বিপ্লব) হতে পেরেছে। এগুলো আমাদের বুঝতে হবে।’

তবে এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য খুব সীমিত উল্লেখ করে সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘লক্ষ্যটা হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, যেই বাংলাদেশে আমরা কথা বলতে পারব, মুক্তভাবে আমাদের মত প্রকাশ করতে পারব এবং আমাদের দেশের যে সার্বভৌমত্ব যেটা নানা কারণে সেটা কমপ্রোমাইজড হচ্ছে আমি যেটাকে বলি, নিন্ম সার্বভৌম অবস্থা সেই নিম সার্বভৌম অবস্থা থেকে কিভাবে মুক্তি পাব-এই সব কিছু নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং শুধু চিন্তার মধ্যেই নিবিষ্ট থাকলে হবে না আমাদের পথ বের করে নিতে হবে, আমাদের সেই পথে চলতে হবে। সেই পথ হচ্ছে সংগ্রামের, সেই পথ হচ্ছে আত্মদানের, সেই পথ হচ্ছে মানুষকে ভালোবাসার, দেশকে ভালোবাসার। আজকে আমরা যদি সবাই সেই স্বাধীনতার মঞ্চে, দেশকে ভালোবাসার মঞ্চে, সাধারণ মানুষের জীবন সামান্য স্বস্তি আনার যে সংগ্রাম সেখানে যদি আমরা কিছু অবদান রাখতে পারি সেটাই যথেষ্ট।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংককের এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির এমিরেটস প্রফেসর ড. নুরুল আমিন দেশের বর্তমান ভোট ব্যবস্থা প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এই বাংলাদেশ আমরা ছোট বেলা থেকে দেখছি ভোটের দিনটা ছিল উৎসবের দিন। ১৯৫৪ সালে আমি ছোট কিন্তু যুক্তফ্রন্ট্রে নির্বাচনের কথা কিছু কিছু যেন মনে আছে এখন এবং অন্যান্য ইলেকশন। আমার বাবা ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন, হাইস্কুলের হেড মাস্টার ছিলেন ভোটের দিনগুলো আমরা দেখতাম ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে-এটা যে কিভাবে এখন হারিয়ে গেল?’

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ফলেই বর্তমানে রাজনৈতিক ও ভোট ব্যবস্থায় এই দুরাবস্থা বলে মন্তব্য করেন ড. নুরুল আমিন।

মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের বইটি একটা রাজনৈতিক দলিল বলে মন্তব্য করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। 

কবি আবদুল হাই শিকদারের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নারী নেত্রী শিরিন হক, নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান এবং বাঙ্গালা গবেষণা‘র প্রকাশক আফজালুল বাসার প্রমুখ।

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম এবার বলিউডে মধুমিতা শিরোনাম বিয়ে নিয়ে আক্ষেপ সোনাক্ষীর শিরোনাম শুক্রবারও মেট্রোরেল চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসছে শিরোনাম হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন বিএনপি নেতা আলাল শিরোনাম ভিসানীতি পরোয়া করে না আ. লীগ: ওবায়দুল কাদের শিরোনাম ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, বললেন ছাত্রলীগ নেতা